চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক সৌমিত্র চক্রবর্তীর কাছে মানবাধিকার কর্মী পরিচয় দিয়ে খোকন চন্দ্র নাথ নামে এক ব্যক্তি ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার গভীর রাতে সাংবাদিক সৌমিত্র চক্রবর্তীর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ফোন করে সে এই হুমকি দেয়। এ বিষয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মছজিদ্দা গ্রামের সতীশ মহাজন বাড়ির মৃত পরিমল চন্দ্র নাথের ছেলে খোকন চন্দ্র নাথ গত মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টায় সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাব সভাপতি সৌমিত্র চক্রবর্তীর হোয়াটসআপ নাম্বারে (০১৮১৯-৬১৭৫৭০) ফোন করে নাম গোপন রেখে নিজেকে একজন মানবাধিকার নেতা পরিচয়ে দিয়ে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। এই টাকা
বিকাশে পাঠাতে বলেন। এসময় সাংবাদিক সৌমিত্র চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে শতাধিক অভিযোগ তার কাছে জমা আছে বলেও হুমকি দেন।
এ ঘটনার পর সাংবাদিক সৌমিত্র তার নিজের ফেসবুকে প্রতারনার শিকারের বর্ননা দিয়ে নম্বরটি (০১৮৩১-৯৩২৬৭২) দিয়ে এর মালিকের সন্ধান চাইলে এলাকার বহু মানুষ তাতে সাড়া দিয়ে এই মোবাইল নাম্বাটির মালিকের নাম খোকন চন্দ্র নাথ এবং তার পরিচয়-ঠিকানা ইত্যাদি পাঠাতে থাকেন। শেষে পরিচয় নিশ্চিত হয়ে বুধবার বিকালে সৌমিত্র সীতাকুণ্ড থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এ বিষয়ে প্রেসক্লাব সভাপতি সাংবাদিক সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, হুমকিদাতা একজন প্রতারক বলে আমি নিশ্চিত হয়েছি। সে পল্লী চিকিৎসক হয়ে খাগড়াছড়ি এলাকায় এমবিবিএস ডাক্তার পরিচয়ে চিকিৎসা দিতে গিয়ে গনধোলাইয়ের শিকার হয়ে পালিয়ে আসেন। কুমিরায় নিজ এলাকায় নানান অপকর্মের কারণে গণধোলাইয়ের শিকার হয়। শেষে নিজেকে মানবাধিকার কর্মী পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন নেতাকর্মী ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সাথে বিভিন্ন অজুহাতে দেখা করতে গিয়ে ছবি তুলে সেই ছবি দেখিয়ে মানুষের সাথে প্রতারণা করে। এছাড়া এলাকার জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের নির্বাচনে কেন্দ্রে লবিং করে ইউপি চেয়ারম্যান বানানোর প্রস্তাব দিয়ে টাকা দাবী করাসহ এলাকায় শালিশী বৈঠকের নামে চাঁদা দাবীরও অভিযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, সবশেষে আমার কাছে চাঁদা দাবী ও হত্যার হুমকির ঘটনায় আমি আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এ বিষয়ে খোকন চন্দ্রের এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান মোর্শেদুল আলম চৌধুরী এবং বাঁশবাড়িয়ার ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শওকত আলী জাহাঙ্গীর বলেন, এলাকায় সে প্রতারক হিসেবে পরিচিত। মানবাধিকারের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজিই তার কাজ। ভুয়া এমবিবিএম ডাক্তার পরিচয় ও নারী কেলেঙ্কারীর জন্য সে পিটুনিও খেয়েছে।
সীতাকুণ্ড থানার ওসি মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, এই খোকন চন্দ্র নাথের সম্পর্কে যতদূর জানা যাচ্ছে সে একজন বড় ধরণের প্রতারক। একদিন সে থানায় এসে মানবাধিকার কর্মী পরিচয় দিয়ে স্যানিটারাইজ বিতরণ করবে বলে জানায় এবং তার অনুষ্ঠানে প্রেসক্লাব সভাপতি সৌমিত্র চক্রবর্তীও আসবেন বলে জানিয়েছিলো। পরে সে একাই এসে এসব দেয়। আমার সাথে ছবি তুলে সে ছবিও তার আইডিতে ব্যবহার করছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে এ হুমকির প্রতিবাদ জানিয়েছেন সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সৈয়দ ফোরকান আবু, এম হেদায়েত, এম সেকান্দার হোসাইন, বর্তমান সহ-সভাপতি জহিরুল ইসলাম সাধারণ সম্পাদক লিটন চৌধুরী প্রমুখ।
এব্যাপারে জানতে চাইলে খোকন চন্দ্র নাথ জানান, তিনি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ত্রাণ দিতে যাওয়ার জন্য সৌমিত্র চক্রবর্তীর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা চেয়েছেন।
















