একদিন পরেই কোরবানির ঈদ। সাধ ও সাধ্যের মধ্যে মিল রেখে ক্রেতারা বলছেন একটি মূল্য। অন্যদিকে একটু লাভের আশায় বিক্রেতারা হাঁকছেন নানা ধরনের দাম। সবমিলিয়ে আনোয়ারা উপজেলার পশুর হাটগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের দর-কষাকষিতে জমে উঠেছে কোরবানির হাট।
সোমবার (১৯ জুলাই) উপজেলার বিভিন্ন পশুর হাটে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাটগুলোতে উঠেছে প্রচুর পরিমাণে গরু ও মহিষ। হাটে একটি গরু কিনতে ৮-১০ জনের একটি করে দল আসছে বাজারে। শুধু স্থানীয়রাই নয়, চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকেও কিছু ব্যাপারী এসেছেন গরু কিনতে। নিয়ে যাবেন ট্রাকভর্তি করে। তাই সকালেই হাট ঘুরে ঘুরে খুঁজছেন পছন্দের পশু ও জিজ্ঞেস করছেন দাম।
২২-২৫ হাজার টাকা মণ দরে কোরবানির পশু কেনার চেষ্টা করছেন ক্রেতারা। তবে কেউ কেউ পছন্দের ওপর ভিত্তি করে একটু বেশি দাম হলেও কিনছেন কোরবানির পশু। তবে অধিকাংশেরই ধারণা, ঈদের আগের দিনে অর্থাৎ শেষদিনে কমে আসবে পশুর দাম।
এদিকে উপজেলার সবচেয়ে বড় পশুর হাট বারখাইন তৈলারদ্বীপ সরকার হাট গরুর বাজারে হঠাৎ ক্রেতার ভাটা পড়েছে । এই বাজারে শেষ দিনে প্রচুর পরিমানে গরু ,মহিষ , ছাগল আসলেও ক্রেতা ছিলোনা আশা অনুরূপ। এতে লোকসান গুনতে হবে বলে জানাচ্ছেন বাজার ইজারাদাররা। অপরদিকে ক্রেতাদের ভাষ্য, হাটে অনেক ছোট গরুও ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা। ৯০ লাখের নিচে পশু বিক্রি করতে নারাজ। তবে দর-কষাকষি ও বিকেলের শেষদিকে এসে কমছে দাম। পার্শ্ব এরপরও দাম তুলনামূলক বেশি। হাটে মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বরাবরের মতো এবারও বেশি। ৭০-৮৫ হাজার টাকার মধ্যেই বেশি গরু কেনাবেচা হয়েছে।
অন্যদিকে বিক্রেতা ও খামারিরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের ভাষ্য, এবার হাটে পশুর দাম খুব কম। তার উপর ক্রেতাও কম । কোরবানির হাটে চাহিদা বেশি রয়েছে ষাঁড়ের। বলদ গরু কেনাবেচা তুলনামূলক কম হচ্ছে। এছাড়া মহিষের চাহিদাও নেই।
বাঁশখালী পশু ব্যবসায়ী আব্দুস সাত্তার হাটে নিয়ে এসেছেন পঁচিশটি গরু। তিনি বলেন, সেই সকালে গরু নিয়ে এসেছেন। মাত্র দুটি গরু বিক্রি করতে পেরেছেন। মানুষ দাম জিজ্ঞেস করতে করতে মাথা খারাপ করে ফেলেছে, কিন্তু নেয়ার বেলায় নেই। সামান্য লাভ হলেও বাকি বাকি গরু গুলো বিক্রি করে দেব, নাহলে অন্য হাটে তুলবো।’
এদিকে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ থেকে এসেছেন ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ নামের এক ব্যাপারী। কিনেছেন পাঁচটি গরু। তিনি বলেন, ‘হাটে গরুর দাম কমাচ্ছেন না বিক্রেতারা। একটু ভালো গরু হলেই লাখ টাকার ওপরে দাম হাঁকছেন। আমার কেনা ৫টি গরুর প্রত্যেকটি ১ লাখ ৭০-৯০ হাজার টাকা করে দাম পড়েছে।
সরকার হাট পশুর বাজারে সড়কের উপর এলোমেলোভাবে গাড়িতে গরু উঠানামা করানোর ফলে আনোয়ারা-বাঁশখালী সড়কে দীর্ঘ তিন কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। বাজারের ইজারাদারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক না থাকার কারণে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। শৃঙ্খলা ফেরাতে আনোয়ারা থানা পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশের সদস্যদের ও পড়তে হয়েছে হিমশিম।
এদিকে উপজেলা প্রশাসন ও প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে হাটে মাইকিং ও স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশনা দেয়া হলেও হাটে সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই। এরমধ্যে অনেকেই হাটে এসেছেন বেড়াতে। বেশিরভাগের মুখে মাস্ক থাকলেও মানছেন না কোনো সামাজিক দূরত্ব। অন্যান্য দিনে হাটের প্রবেশমুখে জীবাণুনাশক ছিটানোর কথা থাকলেও শেষভাগে এসে চোখে পড়েনি এসব কার্যক্রম।
করোনা পরিস্থিতিতে কোরবানি হাঁটের ব্যবস্থাপনা ব্যাপারে সরকারহাট পশু বাজারের ইজারাদার জয়নাল আবেদীন হেলাল বলেন, করোনা সব কিছু শেষ করে দিয়েছে । এই বছর হাটে পযাপ্ত পরিমাণ গরু আসলেও করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির কারণে ক্রেতা আসেনি । পশুর বাজার নিয়ে আমাদের লোকসান গুনতে হবে ।
















