চট্টগ্রাম: শঙ্কর মঠ ও মিশন চট্টগ্রাম মহানগর শাখার উদ্যোগে যোগাচার্য পরমহংস শ্রীশ্রীমৎ স্বামী জ্যোতিশ্বরানন্দ গিরি মহারাজের ১১৫তম আবির্ভাব উৎসব উপলক্ষে বিভিন্ন মাঙ্গলিক কর্মসূচী সিটির ঐতিহাসিক জেএমসেন হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে দশটায় বেলুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন শঙ্কর মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ ও উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি স্বামী তপনানন্দ গিরি মহারাজ। এ উপলক্ষে দুই দিনের কর্মসূচির মধ্যে ছিল গুরুপূজা, মঙ্গলারতি, সহস্র কন্ঠে শ্রীমদ্ভগবদগীতা পাঠ, বিশ্ব শান্তি শ্রীশ্রীগীতাযজ্ঞ, হরি ওঁ কীর্ত্তন, শ্রীশ্রী চন্ডীপাঠ, গৈরিক ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন, অখণ্ড প্রদীপ প্রজ্বলন, সদস্যদের মিলন মেলা, সমাজসেবা কার্যক্রম, শ্রীমদ্ভগবদগীতা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ, দীক্ষাদান অনুষ্ঠান, মাতৃ সম্মেলন, যুব সম্মেলন, সনাতন ধর্ম মহাসম্মেলন, সম্মাননা স্মারক প্রদানহ দুপুর-রাতে প্রসাদ বিতরণ ও ধর্মীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
সন্ধ্যায় জেএমসেন হল প্রাঙ্গণে ধর্ম মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। শঙ্কর মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ সভাপতি স্বামী তপনানন্দ গিরি মহারাজের সভাপতিত্বে ও উৎসব উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ কুমার নন্দীর সঞ্চালনায় মহাসম্মেলনে অতিথি শ্রীশ্রী কৈবল্যধামের মোহন্ত মহারাজ। প্রধান বক্তা ছিলেন হাটহাজারীর পুন্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ শ্রীপাদ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক (অব.) জ্যোতি প্রকাশ দত্ত, চবির ইংরেজি বিভাগের সিন্ডিকেট মেম্বার প্রফেসর সুকান্ত ভট্টাচার্য, বিশিষ্ট ধর্মতত্ত্ববিদ স্বদেশ চক্রবর্তী, চবির সংস্কৃত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কুশল বরণ চক্রবর্তী, চুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক স্থপতি কানু কুমার দাশ ও চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি আশীষ কুমার ভট্টাচার্য। শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন উৎসব উদযাপন পরিষদের অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার শীল ও সাংগঠনিক সম্পাদক অজিত কুমার শীল।
অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন শঙ্কর মঠ ও মিশনের জগদীশ্বরানন্দ ব্রহ্মচারী মহারাজ তড়িৎ কুমার ভট্টাচার্য, অজিত কুমার শীল, সুবল শীল, রনজিত কুমার শীল, অর্পণ ধর, মিন্টু পাল লিটু, বাসুদেব দাশ, লিটন পাল, মিন্টু শীল, চিত্তরঞ্জন। শঙ্কর মঠ ও মিশনের সর্বস্তরের ব্রহ্মচারী, সন্ন্যাসী, হাজার হাজার ভক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
মহাসম্মেলনে বক্তারা বলেন, ‘ধর্ম চেতনা ও ধর্মবোধ মানুষকে সত্য সনাতন সুন্দরের পথে পরিচালিত করার ফলে সমাজ থেকে অন্যায়-অনাচার দূরীভূত হয়। ধর্মবোধ মানুষকে ন্যায়ের শিক্ষা দিয়ে সভ্য করেছে। নিষ্কাম কর্ম ও অন্ধকারাচ্ছন্ন পথ থেকে উত্তরণের জন্য মনুষ্যত্বের সাধনা করাই হল গীতার শিক্ষা। তাই, গীতার আদর্শ ও উদ্দেশ্য বুকে ধারণ করতে পারলে সুন্দর সমাজ বিনির্মাণ হবে।’
বক্তারা আরো বলেন, ‘বিশ্বজনীন ধর্মগ্রন্থ শ্রীশ্রীমদ্ভগবত গীতার কর্ম, জ্ঞান ও ভক্তি মানুষকে বিভিন্ন অপকর্ম থেকে বিরত রাখে। মঠ-মন্দির শুধু ধর্ম চর্চার সাধনা করে না, মানুষের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস, শ্রদ্ধাবোধ সৃষ্টি ও সভ্যতাকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করে।’