দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের জেটি বিধ্বস্ত হওয়ার কারণে বর্তমান ভরা মৌসুমেও জাহাজ চলাচল শুরু হয়নি। ফলে দূর-দূরান্ত থেকে ভ্রমণপিপাসু পর্যটকরা সেন্টমার্টিন যাওয়ার উদ্দেশ্যে কক্সবাজার পাড়ি জমালেও অপ্রাপ্তি ও হতাশা নিয়ে ফিরছেন।
তবে সোমবার কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আমিন আল পারভেজের নেত্বত্বে ৩০ জনের একটি প্রতিনিধিদল কেয়ারী ক্রুজ অ্যান্ড ডাইনে সেন্টমার্টিন দ্বীপে যায়। এ সময় পরিদর্শন টিম জেটির বেহাল অবস্থা ঘুরে দেখেন।
সোমবার জেটি মেরামত ও সার্বিক বিষয় বিবেচনা নিয়ে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করেছে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আমিন আল পারভেজ নেত্বত্বে ৩০ জনের একটি প্রতিনিধিদল।
সূত্রমতে, সেন্টমার্টিন দ্বীপে জেটি সমস্যার কারণে এখনও পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে অনুমতি দিচ্ছে না কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। তবে প্রতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকা সাপেক্ষে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন দ্বীপ নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হতো। কিন্তু সেন্টমার্টিন দ্বীপের একমাত্র জেটিটি ভাঙনে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় নভেম্বর মাস শুরু হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।
এদিকে দেশি-বিদেশি অনেক পর্যটক সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণ করতে পর্যটন শহর কক্সবাজার এসে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু না হওয়ায় হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। এতে পর্যটন সংশ্লিষ্টদের অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে বলে দাবি করছেন কর্ণফুলী জাহাজের কক্সবাজারস্থ ইনচার্জ হোসাইন ইসলাম বাহাদুর।
তিনি বলেন, দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের জেটি পর্যটকদের জন্য উপযোগী কিনা তা সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে গঠিত পরিদর্শন কমিটি।
সোমবার কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আমিন আল পারভেজের নেত্বত্বে ৩০ জনের একটি প্রতিনিধিদল কেয়ারী ক্রুজ অ্যান্ড ডাইনে সেন্টমার্টিন দ্বীপে যায়। এ সময় পরিদর্শন টিম জেটির বেহাল অবস্থা ঘুরে দেখেন।
পরিদর্শন শেষে কমিটির প্রধান এডিসি (রাজস্ব) মোহাম্মদ আমিন আল পারভেজ বলেন, জেটির বর্তমান যে অবস্থা বিদ্যমান এ অবস্থায় জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে না। তবে দ্রুত সময়ে মেরামতের পর চলাচলের উপযোগী হলে অনুমতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পাশাপাশি দেশের দূর-দূরান্ত থেকে কক্সবাজার ভ্রমণে আগত পর্যটকদের জেটি দিয়ে যাতায়াতের নিরাপত্তার বিষয়ে নিশ্চিত করতে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
পরিদর্শনে উপস্থিত ছিলেন এডিসি জেনারেল, সহকারী কমিশনার, টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজ চৌধুরী, সরকারি দপ্তরের পদস্থ কর্মকর্তা, কোস্টগার্ড, ট্যুরিস্টে পুলিশ, নৌ পুলিশ, টেকনাফ মডেল থানা পুলিশসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিরা।
এদিকে জেটি ও দ্বীপের সার্বিক বিষয়ে সেন্টমার্টিনের ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে বুকে জেগে ওঠা সাড়ে আট বর্গকিলোমিটার এলাকার ১০ হাজার বাসিন্দা এবং পর্যটকদের টেকনাফ থেকে দ্বীপে আসা-যাওয়ার একমাত্র জেটি ঘাট নির্মিত হয়েছিল ১৮ বছর আগে।
এর পর থেকে বিভিন্ন বছর ঘূর্ণিঝড় জলোচ্ছ্বাস ও লবণাক্ত পানির ঢেউয়ের আঘাতে জেটির সিংহভাগই ভয়াবহ ভাঙন ধরে। বর্তমানে জেটিটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। টেকনাফ-সেন্টমার্টিন দ্বীপ নৌরুটে চলাচলকারী জাহাজ মালিকগণ নিজেদের উদ্যোগে ও অর্থায়নে বিধ্বস্ত জেটি মেরামতকাজ চালিয়ে যাচ্ছে। মেরামতকাজ এখনও শেষ হয়নি। এই জেটি পুনঃসংস্কারে এক কোটি ৪২ লাখ টাকার প্রস্তাবিত বরাদ্দ এখনও অনুমোদন লাভ করেনি।
















