নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) মাঝে মধ্যেই খবরের শিরোনামে আসছে। ঐতিহ্যবাহী এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে কয়েকদিন পরপর সংঘর্ষে জড়াচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। এতে প্রতিষ্ঠানে সৃষ্টি হয়েছে এক ধরনের অস্থিরতা। নগর আওয়ামী লীগের বড় দুই নেতার দ্বন্দ্ব, আধিপত্য বিস্তার, গ্রুপিংকে কেন্দ্র করে প্রতিষ্ঠান দুটিতে এমন অস্থিরতা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগ বৃহৎ দুটি ধারায় বিভক্ত। একটি পক্ষ মহানগর আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী এবং অন্য পক্ষ সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী। মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর পর এখন গ্রুপটি নিয়ন্ত্রণ করছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। নগর আওয়ামী লীগের বৃহৎ এ দুটি ধারার প্রভাব পড়েছে ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠনের মধ্যে।
দীর্ঘদিন ধরে চমেকে এককভাবে আধিপত্য বিস্তার করে আসছিল আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী ছাত্রলীগের গ্রুপ। নাছির চমেক হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতিও ছিলেন দীর্ঘদিন। গত বছরের ২০ আগস্ট এ পদে আসেন ব্যারিস্টার নওফেল। সেই থেকে ধাপে ধাপে চমেক ক্যাম্পাসে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করে নওফেল গ্রুপ। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একপর্যায়ে উভয় গ্রুপ সংঘর্ষে জড়ায়।
ছোটখাটো সংঘর্ষের পর গত ২৭ এপ্রিল চমেক ক্যান্টিনে এক ছাত্রলীগ নেতাকে কটূক্তির ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত পাঁচজন আহত হন। এ ঘটনার পর পাঁচলাইশ থানায় উভয় গ্রুপ পাল্টাপাল্টি মামলা করে। একইসঙ্গে চমেক হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ধর্মঘট ডাকেন। পরে প্রশাসনের মধ্যস্থতায় সমঝোতা হলে ধর্মঘট প্রত্যাহার করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
সর্বশেষ গত শুক্রবার দিবাগত রাত ও শনিবার উভয় গ্রুপের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে শনিবার জরুরি বৈঠকে বসে প্রশাসন। বৈঠক শেষে মেডিকেল কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। একইসঙ্গে আবাসিক শিক্ষার্থীদের শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে হলত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।
চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আকতার বলেন, শুক্র ও শনিবার সংঘর্ষের ঘটনার পর পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নগর পুলিশ উত্তর জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোখলেছুর রহমান বলেন, চমেক ক্যাম্পাসে আসলে ছোটখাটো বিষয়ে সংঘর্ষ হচ্ছে। এসব ঘটনায় কলেজ প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে। পাশাপাশি আমরা পুলিশের পক্ষ থেকে আইনগত পদক্ষেপ নিচ্ছি। এর আগের ঘটনায় কয়েকটি মামলা হয়েছে। শুক্র ও শনিবারের ঘটনায়ও অভিযোগ সাপেক্ষে মামলা করা হবে।
চমেক ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ গ্রুপিং ও সংঘর্ষের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের মুঠোফোনে একাধিকবার কল হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
















