ঢাকার বাজারে আগাম শীতকালীন শাক-সবজির সরবরাহ বাড়তে শুরু করেছে। এতে কিছু সবজির দাম কমলেও মুরগি, মাছ ও অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা শেষে বাজারে রুপালি ইলিশের সরবরাহও বেড়েছে।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) ঢাকার কারওয়ানবাজারসহ আশপাশের কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
কারওয়ানবাজারের সবজি বিক্রেতা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে ফসলের ক্ষেত নষ্ট ও বাজারে সরবরাহ কমায় বেড়ে গিয়েছিল সব ধরনের শাক-সবজির মূল্য। এখন বৃষ্টিপাত কমায় ও বাজারে আগাম শীতকালীন সবজি আসতে শুরু করায় কমতির দিকে রয়েছে কোনো কোনো সবজির দাম। তবে, হাতেগোনা দুই-একটি সবজির দাম বেড়েছে।’
বাজারে প্রতি কেজি টমেটো ১০০ টাকা, শিম ৬০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, কাঁকরোল ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৫০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, পটোল ৫০ টাকা ও মুলা ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৮০-৮৫ টাকা, বেগুন ৬০-১০০ টাকা, কচুর মুখী ৪০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, আলু ২৫ টাকা ও শসা ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কিছুটা কমেছে কাঁচা মরিচের দামও। বর্তমানে কেজি প্রতি ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬০ টাকায়। আর প্রতি পিস ছোট সাইজের ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়।
এদিকে, নিষেধাজ্ঞা শেষে বাজারে আবারও বাড়তে শুরু করেছে রুপালি ইলিশের ঝিলিক। বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ মোটামুটি ভালো রয়েছে। ১ কেজি ওজনের প্রতিকেজি ইলিশ দুই হাজার ৪০০ টাকা, ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ২০৫০-২২০০ টাকা ও দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার ৫০০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে অন্যান্য মাছও। বাজারে প্রতিকেজি বোয়াল ৮০০-১০০০ টাকা, কোরাল ৮৫০-৯০০ টাকা, আইড় ৭০০-৮০০ টাকা, চাষের রুই ৩০০-৪৫০ টাকা ও কাতল ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া তেলাপিয়া ১৮০-২২০ টাকা, চাষের পাঙাশ ২০০ টাকা, চাষের কৈ ২০০ টাকা, চাষের ট্যাংরা ৫৫০-৬০০ টাকা, এবং পাবদা ৩০০-৩৫০ টাকা ও শিং ৪০০-৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম স্থিতিশীল থাকলেও কেজিতে ১০-২০ টাকা কমেছে সোনালি ও লাল লেয়ার মুরগির দাম। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়, আর সোনালি মুরগির জন্য গুনতে হচ্ছে ২৭০-২৮০ টাকায়। এছাড়া লাল লেয়ার কেজি প্রতি ৩০০ টাকা ও দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬০০ টাকায়।
গরু ও খাসির মাংসের দামও অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৬০-৮০০ টাকা, খাসির মাংস ১ হাজার ২০০ টাকা ও ছাগলের মাংস ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বাজারে প্রতি ডজন লাল ডিম ১৩০ টাকা ও প্রতি ডজন সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়।
বাজারে আসা ক্রেতারা বলছেন, ‘একসাথে সব কিছুর দাম বেশি হওয়ায় মাসের খরচ মেলানো কঠিন হয়ে পড়েছে।’
আর বিক্রেতারা বলছেন, ‘সরবরাহ স্বাভাবিক হলে দাম আরও কিছুটা কমতে পারে আগামী সপ্তাহে।’
সব মিলিয়ে ঢাকার বাজারে শীতের আমেজ স্পষ্ট হলেও নিত্যপণ্যের সামগ্রিক দাম এখনও সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরে। ক্রেতারা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে চাইছেন সবজির দামে কিছুটা স্থিতি এলে, আর বিক্রেতারা আশা করছেন—আগামী সপ্তাহে সরবরাহ বাড়লে বাজার আরও স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।
 
			 
		    













