চট্টগ্রাম: শিক্ষা-গণতত্র-মনুষ্যত্ব রক্ষার সংগ্রামের চার দশকে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ৪০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর শাখার সমাবেশ সিটির নিউমার্কেট মোড়ে রোববার (২১ জানুয়ারি) বিকালে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর শাখার স্কুল বিষয়ক সম্পাদক উম্মে হাবিবার সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন সদস্য অরুপ মহাজন, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সদস্য আহমদ জসীম। সভাপতিত্ব করেন নগর শাখার সভাপতি মিরাজ উদ্দিন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘ছাত্র সমাজের অগ্রবর্তী চিন্তার পথিকৃৎ সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের প্রতিষ্ঠার চার দশক পার করছি । ৪০ বছর আগে সর্বজনীন বিজ্ঞানভিত্তিক সেক্যুলার বৈষম্যহীন একই পদ্ধতির গণতান্ত্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তনের সংগ্রামের প্রত্যয় ঘোষণা করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট যাত্রা শুরু করেছিল। নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে সংগ্রামমূখর ৪০ বছর পার করতে চলেছে এই সংগঠন। শিক্ষার সংকোচন, বাণিজ্যিকীকরণ, বেসরকারিকরণ, সাম্প্রদায়িকরণের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক লড়াই-সংগ্রাম পরিচালনা করে আসছে এ সংগঠন।’
বক্তারা আরো বলেন, ‘২০২৩ থেকে চালু করা হয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১। কোন প্রকার প্রস্তুতি ও আয়োজন ব্যতিরেকে শিক্ষার্থীদের উপর চাপানো হল এই কারিকুলাম। ফলত, ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবকেরা পড়ছেন বিপাকে। শিক্ষানুরাগী মানুষের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবকসহ দেশের প্রথিতযশা শিক্ষাবিদদের মতামত নিয়ে শিক্ষাক্রমের মূল্যায়ন ও পরিমার্জন করার। কিন্তু, সরকার সেদিকে কর্ণপাত করছেন না। নয়া কারিকুলামের আঙ্গিকে নতুন বই ১ জানুয়ারি দেয়া হয়েছে। ভুলে ভরা, নিম্নমানের পাঠ্যপুস্তক দেয়া হচ্ছে কোমলমতি শিশু-কিশোরদের হাতে। এরমধ্যেই মুদ্রণবিভ্রাটের কারণে সাতক্ষীরা থেকে ৩১ হাজার বই ফেরত নেয়া হয়েছে। এমন দায়িত্বহীন কাজ শিশু-কিশোরদের মনে দীর্ঘ মেয়াদী ক্ষত তৈরি করবে। শিক্ষায় বাণিজ্যিকীকরণ-বেসরকারিকরণ নীতির ফলে উচ্চ শিক্ষায় ব্যয় বৃদ্ধি ঘটছে তীব্র আকারে। দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ৫৭টি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ১১৩টি। উচ্চশিক্ষায় অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থীকে অর্থের বিনিময়ে সার্টিফিকেট কিনতে হচ্ছে। জনগণকে জিম্মি করে চলছে শিক্ষার রমরমা ব্যবসা। ইউনেস্কো শিক্ষা খাতে জিডিপির ছয় ভাগ বরাদ্দের কথা বললেও এ বছর আমাদের বরাদ্দ মাত্র এক দশমিক ৭৬ শতাংশ, যেটি গেল বারের চেয়ে .০৭ শতাংশ কম ও দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্ন। ক্যাম্পাসগুলিতে শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের দ্বারা গণরুম-গেস্টরুম নির্যাততের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ ও শিক্ষার গণতান্ত্রিক পরিবেশ ধ্বংস করা হয়েছে।’