চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর, পিপিএম বলেছেন, ১৯৭১ সালে শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবনবাজি রেখে আমাদেরকে স্বাধীন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে যাদের সহ্য হয়নি তারাই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে স্ব-পরিবারে হত্যা করেছে। বঙ্গবন্ধু একমাত্র নেতা যিনি সমগ্র বাঙ্গালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছিলেন। আজ তাঁরই সুযোগ্য কন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে। তাই শোককে শক্তিতে রূপান্তরের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
আজ (১২ আগস্ট) বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডের উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে নগরীর জিইসি মোড়ে আয়োজিত অসহায় মানুষের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ কর্মসূচীর দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সিএমপি কমিশনার বলেন, ১৯৭৫ সালের নারকীয় হত্যাকান্ডের পর ষড়যন্ত্র থেমে নেই। বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে কারা ছিল তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও উদ্দেশ্য হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। সমস্ত ভেদাভেদ ভূলে গিয়ে আপনারা দেশকে ভালোবাসুন, দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র রুখে দিন।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে জানার কোন শেষ নেই। তিনি অত্যন্ত দুরদর্শী নেতা ছিলেন। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠাই তিনি আজীবন যুদ্ধ করে গেছেন। যে ব্যক্তি আজীবন দেশের স্বাধীনতা ও এদেশের মানুষের জন্য ত্যাগ করে গেছেন তাঁকেই সপরিবারে নিষ্ঠুরতম হত্যাকান্ডের শিকার হতে হয়েছে। আমরা দূর্ভাগা জাতি। বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছে তারাই আজ ইতিহাস বিকৃত করছে। নতুন প্রজন্মের কাছে মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের সন্তানদেরকে সরকারের উন্নয়নের মহাসড়কে সামিল হতে হবে। জাতির পিতা হত্যাকারী ও ইতিহাস বিকৃতকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা জরুরী।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদের সভাপতিত্বে ও সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সাধন চন্দ্র বিশ্বাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শফর আলী।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংসদের সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ খোরশেদ আলম (যুদ্ধাহত), মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তারেক মাহমুদ চৌধুরী পাপ্পু, সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সদস্য মোঃ সরওয়ার আলম চৌধুরী মনি, মহানগর কমিটির আহবায়ক সাহেদ মুরাদ সাকু, স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদ রূপালী ব্যাংক লিঃ চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি আবু শাঈদ মাহমুদ রণী প্রমূখ। অনুষ্ঠানে মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অধীন বিভিন্ন থানা কমান্ডের কমান্ডার, ডেপুটি কমান্ডার, সহকারী কমান্ডার, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গতকাল (১১ আগস্ট) বুধবার থেকে আগামী ১৫ আগস্ট রোববার পর্যন্ত ৫ দিনব্যাপী নগরীর বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন ১ হাজার অস্বচ্ছল ও অসহায় মানুষের মাঝে রান্নাকরা খাবার বিতরণের কর্মসূচী গ্রহণ করেছে মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।
রান্নাকরা খাবার বিতরণের কর্মসূচীর দ্বিতীয় দিনে আজ (১২ আগস্ট) বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর জিইসি মোড়, ওয়্যারলেস গেইট, অলংকার মোড়, বায়েজিদ মাজার গেইট, অক্সিজেন মোড়, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট ও কাপ্তাই রাস্তার মাথায় খাবার বিতরণ করা হবে। আগামী ১৪ আগস্ট, শনিবার দুপুরে কর্ণফুলীস্থ রিভারভিউ ক্লাব, নতুন ব্রীজ, কালামিয়া বাজার, চান্দগাঁও থানা মোড়, মেয়র গলি ও বহদ্দারহাট মোড় এলকায় দেয়া হবে খাবার।
আগামী ১৫ আগস্ট, রোববার দুপুরে আগ্রাবাদ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের সামনে, এক্সেস রোড, নয়াবাজার, বড়পোল, নিমতলা মোড়, স্টিল মিল বাজার, কাটগড় আজিজ চত্তর, শুভপুর বাস স্টেশন ও কদমতলী মোড়। খাবার বিতরণ কর্মসূচী পালন করা হবে।
পাঁচদিনের এই কর্মসূচি সফল করার জন্য মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ সবাইকে রোধ জানিয়েছেন।
















