কদিন ধরেই অন্তঃসত্ত্বা ও স্তন্যদায়ী নারীদের কোভিড টিকা দেয়া যাবে কিনা, তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছিলো। অবশেষে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারীদের শর্তসাপেক্ষে টিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তথ্য অধিদপ্তর।
গতকাল রোববার (৮ আগস্ট) টিকা কর্মসূচির পরিচালক ডা. শামসুল হক স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় এ তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো ঝুঁকি ছাড়াই তাদের টিকা দেয়া যেতে পারে। মা ও শিশুকে বাড়তি সুরক্ষা দেবে এটি।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশে অন্তঃসত্ত্বা ও স্তন্যদায়ী নারীদের টিকা দেয়ার দাবি ওঠে। দেশে গত ফেব্রুয়ারি মাসে গণটিকাদান শুরু হলেও অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ওপর-এর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ না হওয়ায় তাদের টিকার বাইরে রেখেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। টিকার প্রভাব নিশ্চিত না হওয়ায় এতদিন বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া হয়নি। পাশাপাশি টিকার পর্যাপ্ত জোগান না থাকাকেও কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন সরকারের নীতি-নির্ধারকরা।
এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের কোভিড টিকা দেয়া শুরু হয়েছে। করোনার টিকার কারণে তাদের বাড়তি কোনো সমস্যা হওয়ার তথ্য এখন পর্যন্ত মেলেনি। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন, যুক্তরাজ্যের জয়েন্ট কমিটি অন ভ্যাকসিনেশন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন এবং অস্ট্রেলিয়ার টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজরি গ্রুপ অন ইমিউনাইজেশন অন্তঃসত্ত্বা নারীদেরও কোভিড টিকা নেয়ার পরামর্শ দিচ্ছে।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, যেখানে টিকা নিলে বিরূপ প্রভাবের আশঙ্কার চেয়ে উপকার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, সেখানে অন্তঃসত্ত্বানারীদেরও কোভিড টিকা নেয়া উচিত।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের গাইনি বিভাগের অধ্যাপক শিখা গাঙ্গুলি বলেন, “গর্ভবতী নারী যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদের অধিকাংশের অবস্থা শোচনীয় পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। এই কারণে আমরা চাচ্ছি তারা যেন টিকা দেয়। কারণ এখন জীবন বাঁচানোই মূল লক্ষ্য।”
আইসিডিডিআরবির একটি গবেষণার তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, “যারা টিকা নিয়েছে এবং নেয়নি, দুই গ্রুপেরই করোনা হয়েছে। তাদের মধ্যে যারা টিকা নিয়েছে, তাদের মৃত্যুহার অনেক কম টিকা না নেয়াদের তুলনায়। করোনাভাইরাস হলেও তারা জটিল পর্যায়ে যাচ্ছে না।”
















