একদিনের নোটিশে গণপরিবহন ও নিরাপত্তা ছাড়া কারখানা খুলে শ্রমিক হয়রানির প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি।
শনিবার (৩১ জুলাই) শ্রমিক সংগঠনটির উদ্যোগে সকল শ্রমিক এলাকায় যার যার জায়গায় দাঁড়িয়ে নেতাকর্মীরা এই প্রতিবাদ জানান।
শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে বেলা সাড়ে ১২টায় গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় সভাপ্রধান তাসলিমা আখ্তার, সাধারণ সম্পাদক জুলহাসনাইন বাবু, অর্থ সম্পাদক প্রবীর সাহা এবং দপ্তর সম্পাদক মুসা কলিমুল্লাহ প্রতিবাদ জানান।
একই সময়ে আশুলিয়া, সাভার, মিরপুর, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রামসহ সারা দেশে শ্রমিক অঞ্চলে শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে প্রতিবাদ জানান গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির স্থানীয় নেতারা।
সারা দেশে শ্রমিকসহ সকল শ্রেণি-পেশার নাগরিকদের এই ঘটনার প্রতিবাদে প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে ছবিসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ ও প্রচারণার আহ্বানও জানান তারা।
আশুলিয়ায় কার্যালয়ের সামনে আশুলিয়া শাখার সভাপ্রধান বাবুল হোসেন, শামীম হোসেন, আশরাফ, শাহিদা বেগম, ফারিয়া রহমান, বিল্লাল হোসেনসহ নেতারা প্রতিবাদ জানান।
সাভারে রানা প্লাজা শাখার উদ্যোগে রানা প্লাজা কার্যালয়ের সামনে সংগঠক সেলিনা আক্তারসহ নেতৃবৃন্দ যার যার জায়গায় প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানান। মিরপুরে মজনু মিয়া, নুরুল ইসলাম, জেসমিনসহ অন্যান্য নেতৃত্ব রূপনগরের দুয়ারীপাড়ায় প্রতিবাদ জানান।
নারায়নগঞ্জে বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির সামনে নারায়নগঞ্জের সভাপ্রধান অঞ্জন দাস, সাধারণ সম্পাদক কাওসার হামিদসহ অন্যান্য নেতত্ব ও শ্রমিকরা প্রতিবাদে অংশ নেন। চট্টগ্রামে কেন্দ্রীয় সহসভাপ্রধান এবং চট্টগ্রামের নেতা হাসান মারুফ রুমি, নুরুল ইসলাম, শহীদ শিমুলসহ অন্যান্যরা প্রতিবাদ জানান। এছাড়া শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার ব্যক্তিরা সংহতি জানিয়ে যার যার অবস্থানে প্রতিবাদ জানান ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদী প্রচার চালান।
প্রতিবাদসমূহে কেন্দ্রীয় সভাপ্রধান তাসলিমা আখ্তার, সাধারণ সম্পাদক ও অন্যান্য নেতৃত্বরা বলেন, আজ থেকে পরিবহন ছাড়া আবারো কারখানার দিকে লাখো শ্রমিকের ঢল নামছে। গতকাল সন্ধ্যায় কোনোরকম গণপরিবহন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে অকস্মাৎ কারখানা খোলার সিদ্ধান্তে শ্রমিকরা চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন, যা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক।
তারা বলেন, যখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় সারা দেশে আরও ১০ দিন লকডাউনের প্রস্তাব দিয়েছে, সেই সময় কারখানা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত মোটেই বিবেচানসম্মত নয়। লাখো শ্রমিক গতবছরের মতো আবারো কারখানার অঞ্চলগুলোতে পায়ে হেঁটে, রিকশা, ভ্যান, ট্রাক, কাভার্ডভ্যানসহ নানাভাবে দুর্ভোগ সহ্য করে কর্মস্থলে আসছেন। বিভিন্ন অঞ্চলে পরিবহনের অভাবে শ্রমিকরা যার পর নাই দুর্ভোগে বিক্ষুব্ধ। অথচ মালিক ও সরকার পরিবহনের দায় না নিয়ে শ্রমিকদের হয়রানি করছে। করোনাকালে কোনরকম স্বাস্থ্যসম্মত পরিবহন ছাড়া জীবনের নিরাপত্তা ছাড়া এভাবে শ্রমিকদের হয়রানি করার তীব্র নিন্দা জানান শ্রমিক নেতারা।
নেতারা অবিলম্বে শ্রমিকদের জন্য পরিবহন, টেস্ট ও টিকার নিশ্চিয়তা বিধানের আহ্বান জানান। তারা আরও বলেন, মানসম্মত পরিবহন ছাড়া শ্রমিকদের বিপদে ফেলে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধিতে এবং শ্রমিক হয়রানি করে যে আসন্ন বিপদ ত্বরান্বিত করা হয়েছে তার দায়ভার মালিক এবং সরকারকেই নিতে হবে।
















