জীবনের সাথে সংস্কৃতির সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। জীবন যাপন পদ্ধতির মধ্যেই সংস্কৃতির উদ্ভব ও বিকাশ। জীবন চর্চার পরিশীলিত, পরিমার্জিত, পরিশ্রুত দিকটাকেই সংস্কৃতি বলা যায়। সংস্কৃতি বিনির্মান ও বিকাশে মানুষের জ্ঞান-বিজ্ঞান, চিন্তা-দর্শন, শিল্প-সাহিত্যে সভ্যতার ক্রমাগত ধারার প্রভাব রয়েছে।
সমাজবিজ্ঞানী ডক্টর এবনে গোলাম সামাদ বলেছেন-‘নৃতত্ত্বে সংস্কৃতি বলতে বোঝায় মানুষ যা জন্মসূত্রে লাভ করে না, যা তাকে শিখে নিতে হয়, এমন সব কিছুকে।’ পাখিরা বাসা বানায়, বাসা বানানো তারা লাভ করে জন্মসূত্রে। কিন্তু মানুষকে শিখতে হয় ঘর-বাড়ি নির্মান।স্থাপত্য মানুষের সংস্কৃতির পরিচায়ক। শিক্ষা হচ্ছে ধনাগার এবং সংস্কৃতি এর প্রকাশ, যার মৃত্যু নেই।
‘শিল্পকাহন’ নামটি একেবারে তরুণ প্রজন্মদের দেওয়া একটি নাম। তারা মূলত এর মধ্যে দিয়ে শিল্প-সংস্কৃতির কথা বলবে। তুলে ধরার চেষ্টা করবে সংস্কৃতির নানা দিক। সকলের সামনে তুলে ধরবে নানা প্রতিভাবান মানুষদের লুকিয়ে থাকা সৃজনশীলতা।
আজ ২৪ জুলাই হতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যাত্রা শুরু করলো ‘শিল্পকাহন’ -‘বোধের শুদ্ধতায় সৃজন কর্ম’ শীর্ষক নামক তরুণ প্রজন্মদের সংগঠন। এখানে শিশু কিশোররা তাদের সৃজনশীলতা প্রকাশ করতে পারবে,গান, নৃত্য, আবৃত্তি, কবিতা, স্থির চিত্র ধারণের মাধ্যমে, ছবি অঙ্কনের মাধ্যমে,পাশাপাশি গল্প বলা ও লেখা তো থাকছেই। শুধু শিশু-কিশোররা নয়, পাশাপাশি সকল সংস্কৃতি প্রেমী মানুষরাই এখানে তাদের ভুবনকে প্রকাশ করতে পারবেন। এই সংগঠনের লোগোর অলংকরণ করেছেন শিল্পী অর্জিতা সেন চৌধুরী।
গতকাল তাদের চূড়ান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতি নির্বাচিত করা হয় অভ্র বড়ুয়াকে৷ সহ-সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত হয় অনিশ দাশ। সাধারণ সম্পাদক করা হয় জুনায়েদ।
সদস্য সচিববৃন্দের মধ্যে রয়েছে-সৃজা দাশ, সুকন্যা মিত্র, অনিন্দা দাশ। কার্যকরী সদস্যবৃন্দের মধ্যে রয়েছে-মৌরি চক্রবর্তী, ফারদীন, অদ্রিজা ঘোষ, নিলাদ্রী বর্ধন, আদিত্য নন্দী ও রোহানকে।
সংগীত বিষয়ক বিভাগের দায়িত্বে থাকবেন-সৃজা দাশ, মৌরি চক্রবর্তী ও তাসনিয়া বিনতে আইউব। কবিতা বিষয়ক বিভাগের দায়িত্বে থাকবেন অভ্র বড়ুয়া ও অনিন্দা দাশ। আবৃত্তি বিষয়ক বিভাগের দায়িত্বে থাকবেন অনিন্দা দাশ, অদ্রিজা ঘোষ ও অভ্র বড়ুয়া। বাদ্যযন্ত্র বিষয়ক বিভাগের দায়িত্বে থাকবেন জুনায়েদ, ফারদীন, নিলাদ্রী বর্ধন ও রোহান। নৃত্য বিষয়ক বিভাগের দায়িত্ব প্রদান কর হয়েছে স্বনামধন্য নৃত্য সংগঠন ‘ওড়িশি এন্ড টেগোর ডান্স মুভমেন্ট সেন্টার, চট্টগ্রামকে’। স্থির চিত্র বিভাগের দায়িত্বে থাকবেন সুকন্যা মিত্র ও নিলাদ্রী বর্ধন। ছবি অঙ্কন বিভাগের দায়িত্বে থাকবেন সুকন্যা মিত্র। গল্পের আসর বিভাগের দায়িত্বে থাকবেন অভ্র বড়ুয়া।
সকল সদস্যগণ সংস্কৃতি প্রেমী তরুণ প্রজন্মকে তাদের সৃজনশীলতা প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এই প্ল্যাটফর্মে।
সভাপতি অভ্র বড়ুয়া ব্যক্ত করেন-‘সুস্থ সংস্কৃতির চর্চাই আমাদের মূল লক্ষ্য ও অহংকার। সুস্থ সংস্কৃতির নান্দনিক বিকাশের মাধ্যমেই ঐতিহ্যের লালিত সেতু বন্ধনে অনায়াসে পৌঁছতে পারে মানুষ।সেই লক্ষ্যে আমাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা দিয়ে কাজ করে যেতে চাই৷ সকলের অংশগ্রহণের পাশাপাশি আমরাও অংশ নেব এই প্ল্যাটফর্মে। সাংস্কৃতিক সম্পাদিকা সুকন্যা মিত্র বলেন- পরবর্তীতে আমরা বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করবো। সকলের ইচ্ছাশক্তিকে কিছুটা হলেও সজীব রাখতে। সেই সাথে আকর্ষণীয় পুরষ্কার প্রদান করা হবে।
সকলে আমাদের পাশে থাকবেন, সৃজনশীলতা এই ‘শিল্পকাহন’ পরিবারের ফেইসবুক পেইজে প্রকাশ করবেন।আপনাদের ভালোবাসাই আমাদের উৎসাহের কেন্দ্রবিন্দু হবে। পথ চলার পাথেয় হয়ে থাকবে।