পারুলেয় বনে এক বর্ষা ছিলেন বুদ্ধ তথাগত,
বনের রাজা পারুলেয় হস্তী হয় তাঁর অনুগত।
বন থেকে কাঠ, ফলমূল, জল জোগাড় করে দিত
হিংস্র পশুর কবল থেকে রক্ষা করতো।
বিশাল হাতির মানব পূজা দেখে একটি বানর,
কৌতুহলী হল ভীষণ কারণটা কি জানার!
ব্যাপারটা কি? ব্যাপারটা কি? কিছুই তো বুঝছি না
ছোট্ট মানবে করছে পূজা বনের রাজা!
এমন ঘটনা যায় কি মানা? যায়না মানা।
নিশ্চই তিনি মহামানব, নন সাধারণ
তাইতো রাজা করছে পূজা, ঠিক বুঝছি না তার কারণ!
আমিও যদি করতে পারতাম একটু সেবা তাঁর
ধন্য হয়ে যেত তবে এই জীবন আমার।
একথা ভেবে কি দান দেবে বানর হল দিশাহারা!
সারা বনে খুঁজে খুঁজে হল পাগলপারা।
হঠাৎ দেখল গাছের ডালে একটা মৌচাক,
অমনি সেটা পাড়ল গিয়ে,
তাকে ধরল ঘিরে মৌ মাছিদের ঝাঁক।
পড়িমরি করে ছোটে নিয়ে মৌয়ের চাক
পিছু ধাওয়া করল তাকে মৌমাছিদের ঝাঁক।
অনেক কষ্টে পৌঁছল সে গৌতম বুদ্ধের কাছে,
বলল, ‘প্রভু ইহা গ্রহণ করুন, এতে খাঁটি মধু আছে।’
বানরের শ্রদ্ধাচিত্ত দেখে ভগবান
সানন্দে গ্রহণ করে মধু করলেন পান।
এই দৃশ্য দেখে বানর মহাখুশি হয়ে
এক গাছ থেকে আরেক গাছে যায় করতালি দিয়ে।
হঠাৎ একটি শুকনো গাছের ডাল ভেঙ্গে পড়ে
আনন্দিত মনে বানর মৃত্যুবরণ করে।
সেই পুণ্যফলে বানর হলো স্বর্গবাসী
বানরের এই আত্মত্যাগ স্মরে বিশ্ব বৌদ্ধবাসী।
এই দিনটির নাম হল তাই ‘শুভ মধু পূর্ণিমা’
জয় হোক মানবতার, ঘুচুক মোহ-কালিমা।
কবি: সংস্কৃতিকর্মী, চট্টগ্রাম।