দেশে নির্মাণ সামগ্রীর অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারনে চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় উন্নয়ন প্রকল্পের প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার চলমান কাজ বন্ধের হুশিয়ারি দিয়েছে এল জি ই ডি ঠিকাদার সমিতির নেতৃবৃন্দরা।
আজ ২২ নভেম্বর, সোমবার দুপুর ১২ টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এ হুশিয়ারি দেন।
এসয়ম সমিতির নেতারা হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য না কমালে চট্টগ্রামের সব উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদারদের সাথে অলোচনা করে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের সব কাজ বন্ধ করে দেয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে এল জি ই ডি ঠিকাদার সমিতির পক্ষে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান টিটু।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, চট্টগ্রামে এলজিইডি, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত বিভাগ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, জেলা পরিষদ, চট্টগ্রাম সিটি কপোরেশনসহ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলছে। কিন্তু হঠাৎ করে গত আট মাস ধরে নির্মাণ সামগ্রির মূল্য ক্রমাগত বৃদ্ধির কারণে ঠিকাদাররা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
আসাদুজ্জামান টিটু বলেন, একই সময়ে প্রায় ৩৫ শতাংশ বেড়েছে ইলেকট্রিক, হার্ডওয়ার, সেনেটারিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম। দ্রব্য মূল্যের উদ্ধগতির কারনে বেড়েছে নির্মাণ শ্রমিকের দৈনিক মজুরিও। আগে একজন নির্মাণ শ্রমিকের দিনে মজুরি ছিল ৫০০ টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ৮০০ টাকা। এতে চলমান প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
শুধু তাই নয়, আট মাস আগে ৬০ গ্রেড রডের প্রতি টন মূল্য ছিল ৫০ হাজার থেকে ৫২ হাজার টাকা। কিন্তু বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৮২ হাজার থেকে ৮৪ হাজার টাকা। একই সময়ে আমদানিকৃত পাথরের মূল্য ছিল প্রতি টন ৩৩০০ থেকে ৩৪০০ টাকা। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫,০০০ থেকে ৫,১০০ টাকা। প্রতি ব্যাগ সিমেন্টের মূল্য ছিল ৩৬০ থেকে ৩৬৫ টাকা। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪২০ টাকা। আগে প্রতি হাজার ইটের মূল্য ছিল ৫০০০ থেকে ৬০০০ টাকা। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৯০০০ থেকে ১০ হাজার টাকা। বিটুমিন ১৫০ কেজি প্রতি ড্রাম বিক্রি হতাে ৬ হাজার ৩০০ টাকা। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১১ হাজার টাকা। বিটুমিন লিকুইট প্রতি টন পূর্বে ছিল ৪২,০০০ টাকা বর্তমান মূল্য ৬০,০০০ টাকা।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, নির্মাণ কাজে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল কোম্পানির উৎপাদিত বিটুমিন ব্যবহার করা হতো। কিন্তু বিদেশ থেকে বিটুমিন আমদানিকারকদের কারসাজির কারণে দেশীয় বিটুমিনের সরবরাহ চাহিদার তুলনায় একেবারেই কমে গেছে। তাছাড়া ড্রাম সংকট দেখিয়ে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল কোম্পানি চাহিদা অনুযায়ী বিটুমিন সরবরাহ দিচ্ছে না। ফলে বাজারে সংকট দেখিয়ে বিটুমিন বিক্রি হচ্ছে প্রতি ড্রাম ১১ হাজার টাকা। এ অবস্থায় নির্মাণ কাজে সরকারি শিডিউলের চেয়ে ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও কামনা করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ঠিকাদার নেতৃবৃন্দদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন ঠিকাদার মহিউদ্দিন সুফল, আলী হোসেন, মহসিন হায়দার নজরুল ইসলাম, সালাউদ্দিন লিটন, সাইফুল ইসলাম, শওকত হোসেন, মো: ইলিয়াছ চৌধুরি, আবদুল্লাহ টিটু, জামশেদ চৌধুরি, জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
















