চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে আবার মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগর শাখা। বন্দরের এনসিটি আন্তর্জাতিক দরপত্র ছাড়াই বিদেশি অপারেটরের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটি।
শনিবার (৮ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বরে মানববন্ধন করে সংগঠনটি।
মানববন্ধনে শ্রমিক নেতারা বলেন, ‘দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরকে কেন্দ্র করে যে কোনো সিদ্ধান্ত হতে হবে স্বচ্ছ, উন্মুক্ত ও জাতীয় স্বার্থের ভিত্তিতে, গোপন চুক্তির ভিত্তিতে নয়।’
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি এসএম লুৎফর রহমান।
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর শুধু অর্থনীতির কেন্দ্র নয়, বরং স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। অতীতে বিদেশি শক্তির দখল ও ষড়যন্ত্রের কারণে দেশ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বর্তমানেও উন্নয়নের নাম করে আন্তর্জাতিক দরপত্র ছাড়া বিদেশিদের হাতে বন্দর তুলে দেওয়ার গভীর পরিকল্পনা চলছে।’
লুৎফর রহমান সতর্ক করে বলেন, ‘বন্দর নিয়ে কোনো গোপন চুক্তি বা ষড়যন্ত্র শ্রমিক সমাজ মেনে নেবে না। প্রয়োজনে বিদেশি অপারেটর নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে, তবে তা হতে হবে প্রকাশ্য আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে।’
অন্য নেতারা বলেন, ‘বন্দরের উন্নয়ন ও কার্যক্রমের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান শ্রমিকদের। কিন্তু তাদের ন্যায্য অধিকার দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত। ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার হরণ, সিবিএ নির্বাচন বন্ধ, চাকরি হারানোর ভয় দেখানো, সমাবেশের অধিকার সীমিত করা এবং ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ তাদের।
শ্রমিকদের দাবি, বন্দরের আইডি কার্ড থেকে মালিকের নাম প্রত্যাহার করতে হবে, জিসিবির সমান মজুরি সিসিটি ও এনসিটি শ্রমিকদের দিতে হবে। এপ্রেইজ কনটেইনার শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি যথাযথভাবে দিতে হবে এবং লেসিং-আনলেসিং শ্রমিকদের ডক শ্রমিকদের মতো কন্টেইনার উঠানামা বোনাস দিতে হবে।
পাশাপাশি শ্রমিকদের অবসরকালীন ভাতা ৬০ লাখ টাকা নির্ধারণ, ঝুঁকিভাতা, পোর্ট ডিউটি ও গৃহনির্মাণ ঋণ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়।
নেতারা আরও বলেন, ‘শ্রমিকদের ঘাম-রক্তে বন্দর টিকে আছে, তাই তাদের মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখা ও অধিকার রক্ষা করা রাষ্ট্র এবং বন্দর কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব।’
দেশের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হিসেবে বন্দরকে অস্বচ্ছ চুক্তি বা বিদেশি প্রভাবের কাছে ঠেলে দেওয়া হলে শ্রমিক সমাজ তীব্র আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক হামিদুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক মুহাম্মদ নুরুন্নবী, ট্রেড ইউনিয়ন সম্পাদক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মজুমদার, পাঠাগার সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, বন্দর ইসলামী শ্রমিক সংঘের সভাপতি মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইয়াছিন, বন্দর থানা সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম আদনান।
















