নিজস্ব প্রতিবেদক :
সকাল ১০টা। উৎসব আমেজ পুরো আনোয়ারা পারকি সৈকত প্রাঙ্গন জুড়ে। কারো কারো পরনে লাল, হলুদ নানান রঙের বিশেষ ইউনিফর্ম। সকলের চোখে মুখেই আনন্দের ঝিলিক। বিভিন্ন বয়সের তরুণ-তরুণীর পদচারণায় সরব হয়ে উঠছে পারকি সমুদ্র প্রাঙ্গন। এদের সকলের পরিচয় ‘এরা রক্তের ফেরিওয়ালা’।
আনোয়ারা ব্লাড ডোনেটে গ্রুপের ৫ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে রক্তদাতা ও স্বেচ্ছাসেবী ২৬ টি সংগঠনের সদস্যদের মিলনমেলা বসে উপজেলার পারকি সৈকতে।
এ উপলক্ষে শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) এক বর্নাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করে অনলাইনভিত্তিক অন্যতম সক্রিয় সেচ্ছাসেবী সংগঠন আনোয়ারা ব্লাড ডোনেট গ্রুপ৷
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জোবায়ের আহমেদ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন ২নং বারশত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম. এ কাইয়ুম শাহ, আনোয়ারা ব্লাড ডোনেটে গ্রুপের উপদেষ্টা নাজিম উদ্দিন, আবুল বশর, আজিম উদ্দিন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও শেখ জোবায়ের আহমেদ বলেন, মানবতাবোধের অভাবে সংঘাতময় বিশ্বে এখন দেশে দেশে নিরীহ মানুষের রক্ত ঝড়ছে। সিরিয়া, তুরস্ক, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, মিশর, মায়ানমারসহ বিভিন্ন দেশে নিরীহ নারী-শিশুসহ সাধারণ মানুষের যখন অকাতরে রক্ত ঝড়ছে ঠিক তখনি আমাদের দেশে মানবতাবাদী কিছু তরুণের উদ্যোগ অবশ্যই দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তরুণরাই যেকোন সংকটকালে জাতিকে দিশা দেখিয়েছে। তাদের সাহসী ও সময়োপযুগী কর্মকান্ডের ফলেই দেশের অগ্রগতি ত্বরান্বিত হয়েছে।
আনোয়ারা ব্লাড ডোনেট গ্রুপের-এই সংগঠনের উদ্যোক্তা ও কর্মীরা এখন মানবতার অনন্য দৃষ্টান্ত। তাদের দেওয়া রক্তে জীবন ফিরে পাচ্ছে অসংখ্য মুমূর্ষ রোগী। ভবিষ্যতে আমরা গর্ব করে বলতে পারব রক্তের অভাবে বাংলাদেশে আর কোন মানুষ মারা যাচ্ছে না।
অনুষ্ঠানে বক্তারা আরো বলেন, যুব সমাজকে নিয়ে যখন উদ্বেগ আর উৎকন্ঠা চারপাশে, এই সময়ে এক ঝাঁক তরুণ মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। মানুষের জীবন বাঁচাতে রক্তের যোগান দিয়ে চলেছে। আমরা আশাবাদী ভবিষ্যতে এই তরুণরাই এই সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আগামীর সুুন্দর পৃথিবী রচিত হবে তাদের হাত ধরেই।
আনোয়ারা ব্লাড ডোনেটে গ্রুপের এডমিন মো. জামশেদ ও কো- এডমিন হালিমা আক্তারের যৌথ সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্যে আনোয়ারা ব্লাড ডোনেটের এডমিন ছলিম আল আনোয়ার বলেন, ২০১৭ সালের ৪ নভেম্বর ১৪ জন সদস্য আনোয়ারা ব্লাড ডোনেট প্রতিষ্ঠা করে। গত ৫ বছরে এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৫ জন। রক্ত চেয়ে আমাদের কাছে কেউ বিফল হয়েছেন এমন নজির নেই বললেই চলে৷ এই ধারা অব্যাহত রাখতে আমরা সদা প্রস্তুত। অনুষ্ঠানে এডমিন প্যানেল থেকে আরও উপস্থিত ছিলেন নুরুল আনোয়ার ইমরান, এম. আবু তালেব, আরিফ হোসেন প্রমুখ।
অনুষ্ঠান উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধাে,স্বেচ্ছাসেবক এবং রক্তদাতাদের সম্মানে বিশেষ স্যালুট প্রদান করা হয়৷ অনুষ্ঠানে হিফজুল কোরআন অধ্যয়নরত ৫০জন শিক্ষার্থীকে শীতবস্ত্র,ভেসলিন,সাবান,টুথপেস্ট ও টুথব্রাশ উপহার দেয়া হয়৷ এছাড়াও গ্রুপের সেরা রক্তদাতা,সেরা রক্ত সংগ্রাহক, সংগঠন, ব্যাক্তি সম্মাননা ও সাংষ্কতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
















