কক্সবাজার শহরে ভাড়া নিয়ে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে রিকশা চালককে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত শুকুর আলী নামের যাত্রীকে আটক করেছে পুলিশ। কিছুদিন আগে আব্দুস শুক্কুর নামের এক রিকশা চালককে মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পুলিশ সুপারের নজরে আসে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
সোমবার (৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান। আটককৃত ব্যক্তি হলেন, শহরের মোহাজেরপাড়া এলাকার শুকুর আলী (৩০)। তার বাবার নাম আবদুল জব্বার।
লকডাউন সময়ে অভিযুক্ত শুকুর আলী কক্সবাজার শহর থেকে চেইন্দা নামক এলাকায় যাওয়ার জন্য রিকশা ভাড়া করেন। রিকশা চালক আব্দুস শুক্কুর গন্তব্যস্থান শহর থেকে দূরে হওয়ায় ভাড়া ২০০ টাকা দিতে বলেন। এতে যাত্রী শুকুর আলী ক্ষুব্ধ হয়ে রিকশাচালককে তর্কের এক পর্যায়ে মারধর করেন। বাড়াবাড়ি করলে তাকে দেখে নেওয়ারও হুমকি দেন। ওই ঘটনার একমাস পর রিকশাওয়ালা আব্দুস শুক্কুরকে একা পেয়ে পূর্বের ঘটনার জের টেনে আবারও তাকে মারধর করেন। রাস্তায় টানাহেঁচড়া করেন। চরম অপদস্থ করেন। মারধরের এই ভিডিও ভাইরাল হলে শুকুর আলী পুলিশের হাতে আটক হন।
ভুক্তভোগী রিকশা চালক আব্দুস শুক্কুর অভিযোগ করে বলেন, ‘লকডাউনে গাড়ি চলাচল বন্ধ। তাই রিকশা নিয়ে শহরের বাইরে চেইন্দা যেতে ২০০ টাকা ভাড়া চেয়েছি। পরে যখন তিনি গালিগালাজ করছেন তখন আমি ভয় পেয়ে যাই। তাকে বলি, আপনার যা খুশি তাই ভাড়া দিয়েন। এরপরও তিনি শান্ত না হয়ে আমার ওপর চোটপাট করেন। প্রভাব দেখান। তিনি এলাকার প্রভাবশালী, আমি ২০০ টাকা চেয়ে অন্যায় করেছি বলে আমাকে মারধর করেন। আমি চলে আসি। একমাস পর গত রোববার (৮ আগস্ট) আমাকে একা পেয়ে আগের ঘটনাটির জন্য আবারও মারলেন! রাস্তায় টেনে-হিঁচড়ে ফেলে দিলেন।
অভিযুক্ত শুকুর আলীর স্ত্রী আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘সেই অনেক আগে ঘটনাটি মীমাংসা হয়ে গেছে। আবার কীভাবে ঘটনাটি ঘটলো তা আমি জানি না। তবে ভাইরাল ভিডিওটি আমি দেখেছি। আমার স্বামী আবার কেন তাকে মারলো, এর পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে কিনা তা খতিয়ে দেখার জন্য পুলিশের কাছে অনুরোধ জানচ্ছি। আমার স্বামীকে বলেছি রিকশা চালকের দেখা পেলে আগের ঘটনাটির জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়ে নিতে। কিন্তু এই কান্ড কেন হয়েছে তা এখনো জানি না আমি।
এসপি হাসানুজ্জামান বলেন, খেটে খাওয়া এই রিকশা চালককে এভাবে অমানবিক মারধর ও নির্যাতনের ভিডিও দেখে আমার হৃদয়ে নাড়া দিয়েছে। দিনদুপুরে একজন মানুষকে কেউ এভাবে অত্যাচার করবে তা কখনো মেনে নেওয়া যায় না। বিষয়টি আমার নজরে আসায় আমি পুলিশ পাঠিয়ে গতকাল সোমবার অভিযুক্ত শুকুর আলীকে আটক করে। ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
















