রিয়াদ হোসেন, আনোয়ারা প্রতিনিধি: আনোয়ারা উপজেলার আড়তগুলোতে চলছে কুরবানীর পশুর চামড়ায় লবণ লাগানোর কাজ। গরু, ছাগল, মহিষের চামড়া নিয়ে দারুণ ব্যস্ততা শ্রমিকরা ।
২২ শে জুলাই বৃহস্পতিবার উপজেলার বটতলী , মালঘর বাজার এবং চাতরী চৌমুহনী বাজারসহ বিভিন্ন হাট বাজার এবং চামড়ার গুদাম ঘুরে এই দৃশ্য দেখা যায়।
বিভিন্ন জায়গা থেকে আনা কুরবানির পশুর চামড়া পরিস্কার করে সেগুলোতে হাতে লবন মাখিয়ে স্তুপ করে রাখতে ব্যস্ত সময় পার করছে শ্রমিকরা।
আড়তগুলো অস্বাস্থ্যকর, নোংরা। তার ওপর চামড়ার কটু গন্ধে নাক বন্ধ হয়ে আসে। এরই মাঝে আড়তগুলোতে শ্রমিকদের ভীষণ ব্যস্ততা। ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে তারা চামড়ায় লবণ দেয়ার কাজ করছিলো।
গতকাল দুপুর থেকে পোস্তামুখি সড়কে খুচরা চামড়া ব্যবসায়ীরা চামড়া এনে জড়ো করতে শুরু করেন। সন্ধ্যার আগেই রাস্তায় চামড়ার স্তূপ, ফুটপাতে চামড়া স্তূপে ভরে ওঠে। সেখান থেকে খুচরা ব্যবসায়ীদের থেকে চামড়া কিনে সেগুলো নেওয়া হচ্ছিল আড়তগুলোতে।
কাঁচা চামড়াগুলোকে এনে প্রথমে একটা পরিষ্কার জায়গায় রাখা হয়। সেখানে পানি দিয়ে ধুয়ে চামড়ার ওপর লবণ ছিটিয়ে দেওয়া হয়। একটা চামড়ায় লবণ ছিটানো হলে তার উপর আরেকটা চামড়া দেওয়া হয়। এভাবে তিন থেকে চার ফুট উঁচু স্তূপ তৈরি করা হয়।
এ সময় ফয়সাল নামের এক শ্রমিকের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত কাল সন্ধা থেকে সারা রাত ধরে চামড়া সংরক্ষণ করতে চামড়ায় লবন মাখানোর কাজ চলছে। তিনি আরো জানান,কাঁচা চামড়া সংরক্ষণের আসল উপকরণ হচ্ছে লবন। মাঝারি আকারের একটি গরুর কাচা চামড়ায় ৮ থেকে ৯ কেজি লবণ লাগে। এছাড়া আরও অনেক ধরনের কেমিক্যাল প্রয়োজন হয়। সেগুলো দিয়ে চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে গরুর চামড়া সর্বোচ্চ ৩ মাস, ছাগলের চামড়া ১৫ দিন, ভেড়ার চামড়া ৭ দিন সংরক্ষণ করা যায়। এরপর এই লবণ দেওয়া চামড়াতেই আবার পচন ধরা শুরু হয়।
আহমদ কবির নামের এক মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী বলেন, এবার চামড়ার দাম অনেক কম। বড় চামড়া তেমন নেই বললেই চলে। সব মাঝারি আর ছোট চামড়া। তিনি আরো বলেন, কাঁচা অবস্থায় গরু জবাইয়ের ১০ ঘণ্টা, খাসির ক্ষেত্রে ৫ থেকে ৭ ঘণ্টার মধ্যেই চামড়ায় লবণ দিতে হবে। অন্যথায় চামড়া পচবে। আবার লবণ দিয়েই যেমন চামড়া সংরক্ষণ করা হয় আবার মেয়াদ শেষ হলে এই লবণই চামড়া খায়। তখন পচন ধরে যায় চামড়াতে।
উল্লেখ্য যে,এবার লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরু বা মহিষের চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ঢাকায় ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়, গত বছর এই দাম ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। এবং ঢাকার বাইরে ৩৩ টাকা থেকে ৩৭ টাকা,গতবছর যা ২৮ থেকে ৩২ টাকা ছিল।
এছাড়া সারা দেশে লবণযুক্ত খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১৫ থেকে ১৭ টাকা আর বকরির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গতবছর খাসির চামড়া ১৩ থেকে ১৫ টাকা এবং বকরির চামড়া ১০ থেকে ১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিলো।
















