রাত পোহালেই পবিত্র ঈদুল আজহা। স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে নগরী ছাড়ছে উত্তরবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ। ঘরমুখো মানুষের চাপে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কে যানবাহন ও যাত্রীদের উপচেপড়া রয়েছে।
বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেলের পাশাপাশি কম খরচে ট্রাকে করে বাড়ি ফিরছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। অনেকেই আবার ট্রাকে গরুবোঝাই করে ঢাকায় নিয়ে এসেছেন। গরু বিক্রি করে সে খালি ট্রাকে মানুষ বোঝাই করে বাড়ি ফিরছেন।
মঙ্গলবার (২০ জুলাই) ভোর থেকেই বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থেকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত মহাসড়কে অন্যান্য যানবাহনের পাশাপাশি ঢাকা-নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পণ্য ও পশুবাহী ট্রাকে করে গ্রামে ফিরছে মানুষ। বাদ যায়নি নারী-শিশুরাও।
পরিবারের সবার ঝুঁকি নিয়ে ট্রাকে জায়গা করে নিতে হয়েছে শিশুদের। ঘরমুখো মানুষের চাপে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে যানজটে আটকে থেকে বিরক্ত হয়ে ট্রাক, বাস থেকে নেমে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় গ্রামে ছুটছেন।
নাটোর থেকে আসা রাসেল, আবুল, হাসানসহ কয়েকজন ঢাকায় গরু নিয়ে এসেছেন। সেগুলো বিক্রি করে আবার একই ট্রাকে করে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। যাওয়ার সময়ে কিছু যাত্রী নিয়ে যাচ্ছেন। আবুল নামে একজন বলেন, ঢাকায় গিয়েছিলাম ট্রাক বোঝাই করে গরু নিয়ে এখন আবার গ্রামে ফিরে যাচ্ছি ট্রাক বোঝাই করে মানুষ নিয়ে। কিন্তু যানজটের কারণে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
পরিবার নিয়ে ঢাকা থেকে পাবনাগামী ট্রাক যাত্রী আব্দুর রউফ বলেন, ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে পাবনায় যাচ্ছি। বাসের তুলনায় ট্রাকে ভাড়া কমের কারণে পরিবারসহ ট্রাকে উঠেছি। কিন্তু যানজটের কারণে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ভোগান্তি সহ্য করেও স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করবো এটাই আনন্দের।
আরেক ট্রাকের যাত্রী ইউনুস আলী জানিয়েছেন, স্বল্প বেতনের চাকরি করি। বাসে সিট পাওয়া খুবই কঠিন। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে প্রাইভেটকার অথবা মাইক্রোবাসে যাওয়ার সামর্থ্য নেই। তাই কম ভাড়ায় ঝুঁকি নিয়ে ট্রাকে করে স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি রংপুর যাচ্ছি।
দিনাজপুরগামী ট্রাকযাত্রী রফিক, সোবাহান, রুবেল ও সুমন জানিয়েছেন, বাসে ভাড়া বেশি। আমরা সামান্য বেতনের চাকরি করি। তাই কষ্ট হলেও ট্রাকে করে বাড়ি ফিরছি। স্বজনদের সাথে ঈদ করতে অনেক ভোগান্তি সহ্য করতে হচ্ছে। মহাসড়কে যানবাহনের ধীরগতি এবং যানজটের কারনে আমাদের বেশী ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। আমাদের মতো নিম্ন আয়ের আরও অনেক মানুষ কম খরচে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রাকে করে বাড়ি ফিরছেন।
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজাহান আলী বলেন, মহাসড়কে ঈদে ঘরমুখো মানুষের উপচে পড়া ভিড়। বাসে সিট না পেয়ে অনেকে ট্রাকে বাড়ি যাচ্ছেন। যানবাহনের চাপ অনেক বেশি। তাই বিভিন্ন স্থানে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে ঝুকিপূর্ণ নলকা সেতুর কারণে মাঝে মধ্যেই যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। যানজট নিরসনে পুলিশ সর্বাত্মক কাজ করছে। ঈদে ঘরমুখো মানুষকে নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে মহসড়কে তৎপর রয়েছে হাইওয়ে পুলিশ।
















