সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড আন্তর্জাতিক শঙ্কর মঠের স্থপতি যোগতত্ত্ববিদ ১০৮ স্বামী ব্রহ্মানন্দ পরমহংসদেবের আবির্ভাব ও তিরোধান তিথি উৎসব সোমবার (২৩ জুন) মঠ প্রাঙ্গনে উদযাপন করা হয়েছে।
এ উপলক্ষে আয়োজিত দিনব্যাপী বিভিন্ন ধর্মীয় কর্মসূচীর মধ্যে ছিল-মঙ্গলারতি, গুরুবন্দনা, প্রার্থনা সঙ্গীত, সকল মহারাজের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য প্রদান, শ্রীশ্রী চন্ডীপাঠ, মাতৃবন্দনা, শ্রীশ্রী বিশ্ব শান্তি গীতাযজ্ঞ, হরি ওঁ কীর্ত্তন, দীক্ষানুষ্ঠান, ভোগরাগ, পূজা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যোগসঙ্গীত, প্রসাদ বিতরণ ও “স্বামী ব্রহ্মানন্দ পরমহংসদেবের যোগতত্ত্ব বর্ণন” বিষয়ক আলোচনা।
শ্রীশ্রী বিশ্বশান্তি গীতাযজ্ঞ পরিচালনা ও ধর্মসভায় সভাপতিত্ব করেন সীতাকুণ্ড আন্তর্জাতিক শঙ্কর মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী তপনানন্দ গিরি মহারাজ। শঙ্কর মঠ ও মিশন কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অজিত কুমার শীলের সঞ্চালনায় ধর্মসভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক তড়িৎ কুমার ভট্টাচার্য্য। বক্তব্য রাখেন সন্তোষানন্দ মহারাজ, মুক্তানন্দ গিরি মহারাজ, জগদীশ্বরানন্দ ব্রহ্মচারী, অজিত কুমার শীল, অঅনজন দাশ, রনজিত কুমার শীল, কল্লোল সেন, প্রদীপ মহাজন জহর।
মঠের সাধু-সন্ন্যাসী, মহানগর, বিভিন্ন জেলা-উপজেলা কমিটি ও ভক্ত-শিষ্যবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
তপনানন্দ গিরি মহারাজ বলেন, ‘চট্টগ্রাম শহরের ৮ মাইল উত্তরে ফতেয়াবাদ গ্রামে ১২৬৭ বঙ্গাব্দে জ্যৈষ্ঠ মাসের কৃষ্ণাত্রয়োদশী তিথিতে গুরুদাস বৈদ্য ও যশোদা সুন্দরীর সংসারে শ্রীশ্রীমৎ স্বামী ব্রহ্মানন্দ পরমহংসদেব জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাল্য নাম ছিল নবীন বৈদ্য। যৌবনে নবীন সাধু নামে তিনি সুপরিচিত হন। নবীন সাধু বাল্যকাল হইতে ধর্ম অনুরক্ত ছিলেন। তিনি আয়ুর্বেদ শাস্ত্র, বেদ বেদান্ত ও বিভিন্ন ধর্ম গ্রন্থাদি চর্চা করতেন। ফতেয়াবাদে সাধুর পাহাড়ে শ্রীমৎ স্বামী সত্যানন্দ গিরি মহারাজ প্রতিষ্ঠিত সত্যানন্দ মঠে বসে সাধনা করতেন শ্রীশ্রীমৎ স্বামী ব্রহ্মানন্দ পরমহংসদেব। সে সময়ে স্বামী সত্যানন্দ গিরি মহারাজের নির্দেশে সীতাকুণ্ডে এসে ধ্যান-সাধনা ও গীতা প্রচারের মাধ্যমে শঙ্কর মঠ প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। ১৩৩২ বঙ্গাব্দে জ্যৈষ্ঠ মাসের কৃষ্ণাত্রয়োদশী তিথিতে অর্থাৎ জন্ম তিথিতেই শঙ্কর মঠে ৬৫ বৎসর বয়সে পদ্মাসনে উপবিষ্ট অবস্থায় ধ্যানযোগে ১০৮ স্বামী ব্রহ্মানন্দ পরমহংস মহারাজ ব্রহ্মানন্দে নির্বাণ সমাধি লাভ করেন। তিনি একাধারে কবি, মনস্তত্ববিদ ও দার্শনিক ছিলেন। তাঁর আদর্শ ও উদ্দেশ্য বুকে ধারণ করতে পারলে সুন্দর ও আলোকিত সমাজ বিনির্মাণ হবে।’