চট্টগ্রাম: শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও সজীব ওয়াজেদ জয়সহ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে আরো একটি মামলা করা হয়েছে। মামলায় সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, টিউলিপ সিদ্দিকী, রাদোয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, প্রাক্তন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক ও হাছান মাহমুদসহ সুনির্দিষ্ট ২৫ জন ও অজ্ঞাত ৪০০জনকে আসামি করা হয়েছে।
সিটির হালিশহর এলাকার ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মামুন আলী প্রকাশ কিং আলী বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বাদী হয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন আদালতে এ মামলা করেন।
মামলার আরজিতে বলা হয়, ‘বাদী মোহাম্মদ মামুন আলী ২০১৬ সালের ১৫ আগস্ট তার হালিশহরস্থ কেএজি এন্টারপ্রাইজ নামের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার জন্মদিন উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। প্রায় ৩০০ নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে জন্মদিনের কেক কাটার সময় হালিশহর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব চৌধুরীর নেতৃত্বে এক দল পুলিশ অতর্কিতে হামলা চালায়। পুলিশ উপস্থিত নেতাকর্মীদের বেধড়ক মারধর করে ও জন্মদিনের কেক এবং আগত নেতাকর্মীদের আপ্যায়নের জন্য আনা খাদ্য তছনছ করে দেয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে বাদীসহ ১৭ জন বিএনপির নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে হালিশহর থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। তাদেরকে থানার অভ্যন্তরে টর্চার সেলে নিয়ে বেদম প্রহার করা হয়। ওসির ফোন থেকে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কল করা হলে তিনি বাদীকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘বাদী নাকি কেক না কেটে তার কলিজা কেটেছেন।’ এ অপরাধে তাকে খুন করা উচিত বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। একইভাবে শেখ রেহানা ভিডিও কলে বাদীকে গালিগালাজ করে ক্রসফায়ারের হুমকি দেন। প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালও ফোনে একই ধরনের আচরণ করেন। এসবের পর ওসি বাদীর কাছে দশ লাখ টাকা দাবি করে ও তা না হলে ক্রসফায়ারে দেয়ার হুমকি দেয়। পর দিন বাদীর পিতা ওসির হাতে দশ লাখ টাকা তুলে দেন।’
মামলায় প্রণব চৌধুরী ছাড়াও অপরাপর আসামিরা হলেন প্রাক্তন আইজিপি একেএম শহীদুল হক, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার মোহাম্মদ ইকবাল বাহার, ডাক্তার ফজল আমিনের পুত্র এরশাদুল আমিন, নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার এসএম তানভীর আরাফাত, প্রাক্তন এসআই জামাল উদ্দিন, মাহবুব মোরশেদ, হিমেল রায়, রেজাউল হোসাইন, জমির উদ্দিন, মোহাম্মদ মোরশেদ আলম, সোহেল রানা, এএসআই বাবুল মিয়া, জহিরুল ইসলাম ও শরীফ হাসান।
বাদীর আরজি শুনানি শেষে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন আদালত-৪’-এর বিচারক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন হালিশহর থানার ওসিকে তদন্তপূর্বক মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করার নির্দেশ দেন।