নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রামের পাঁচ তারকা হোটেল রেডিসন ব্লু বে ভিউ’র ২০ তলা থেকে লাফ দেয়া যুবক আরিফ কবির মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) রাতে কোতোয়ালী থানায় দায়েরকৃত অপমৃত্যুর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই শিমুল চন্দ্র দাশ এসব তথ্য জানান।
নিহত আরিফ কবিরের পরিবারের উদ্ধৃতি দিয়ে পুলিশ জানায়, আরিফ ঢাকার উত্তরার একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল থেকে ও লেভেল সম্পন্ন করে। এরপর তার পড়াশোনা আর এগোয়নি। তার বাবা এনামুল করিব সরকারী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন। ২০১৮ সালে তিনি মারা গেলে আরিফ ও তার অপর দুই ভাই-বোনকে নিয়ে তার মা বাবার বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন।
নিহত আরিফের মা ফারহানা দোজা’র উদ্ধৃতি দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা এস আই শিমুল দাশ জানান, আরিফের মা ফারহানা দোজা জানিয়েছেন, তার ছেলে ২০১৫ সাল থেকে অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার (ওসিডি) রোগে ভুগছিলেন। এ কারণে বিভিন্ন সময়ে সে বাসাতেও অস্বাভাবিক আচরণ করত। মাঝে মাঝে পুলিশ ও নানাভাবে ভয় দেখিয়ে তাকে নিয়ন্ত্রণ করা হতো। সর্বশেষ গত ৯ নভেম্বর সে মায়ের সাথে রাগারাগি করে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। ১০ তারিখ মায়ের সাথে যোগাযোগ করে গুলশানে বন্ধুর বাসায় আছে বলে জানায়। এরপর ১৩ তারিখ পর্যন্ত তার মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল এবং পরিবারের সাথে তার কোনও যোগাযোগ ছিল না। ১৪ তারিখ আরিফ তার মায়ের সাথে যোগাযোগ করে কক্সবাজার আছেন বলে জানান। ওই সময় তার মা তাকে দ্রুত ঢাকায় ফিরে আসার অনুরোধ করে এবং ফিরে না আসলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করবেন বলেও জানান। কিন্তু আরিফ ঢাকায় না ফিরে সোমবার বিকেলে চট্টগ্রাম আসেন এবং সন্ধ্যার দিকে রেডিসন ব্লু’র ২০ তলার রেস্টুরেন্ট এবং বারে যান। চট্টগ্রামে ফিরে সর্বশেষ তার মায়ের সাথে একবার ভিডিও কলে কথা বলেন আরিফ।
রেডিসন ব্লু কর্তৃপক্ষ জানায়, রেডিসনে এসে কিছু খাবারের অর্ডার দিয়ে খেতে খেতে বেশ কিছু সময় তন্দ্রাচ্ছন্ন ছিলেন তিনি। হঠাৎ তন্দ্রা থেকে উঠে রেস্টুরেন্টের ওপেন স্পেস দিয়ে নিচে লাফ দেন। এ সময় রেস্টুরেন্টে থাকা দুইজন বিদেশি অতিথিও তা প্রত্যক্ষ করেন। লাফ দেয়ার সাথে সাথে রেডিসনের নিরাপত্তা কর্মীরা দ্রুত নিচে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
















