জে,জাহেদ, সিনিয়র প্রতিবেদক:
চট্টগ্রাম কর্ণফুলী উপজেলার চার ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারি কর্মকর্তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ (তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার) করা হয়েছে। একই আদেশে এসব কর্মস্থলে নতুন দায়িত্বভার দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও একজনকে সাময়িক বরখাস্ত করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা এবং ফৌজদারি মামলা (নং-২৩/৫০৫) দায়ের করা হয়েছে সিএমপির কর্ণফুলী থানায়।
সোমবার (১৬ নভেম্বর) চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয় রাজস্ব শাখার ডেপুটি কালেক্টর সুজন চন্দ্র রায় স্বাক্ষরিত এ অফিস আদেশ দেওয়া হয়।
আদেশে বড়উঠান ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারি কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন কে পটিয়া উপজেলার খরনা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে, জুলধা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারি কর্মকর্তা মোঃ নাছির কে চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে, চরলক্ষ্যা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারি কর্মকর্তা মোঃ নুরুল হাসান কে পটিয়ার ধলঘাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ও চরপাথরঘাটা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারি কর্মকর্তা ইফতেখার উদ্দিন কে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কাউখালী ইউনিয়ন ভূমি অফিসে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। পাশাপাশি ষোলশহর ভূমি অফিসের (চান্দগাঁও সার্কেল) ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা জিএম জহির উদ্দিন কে চরপাথরঘাটা ও শিকলবাহা ভূমি অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
আদেশে আরো বলা হয়, বদলিকৃত কর্মকর্তাগণ ১৬ নভেম্বর বর্তমান কর্মস্থল অবমুক্ত হয়ে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান করবেন। অন্যথায় ১৭ নভেম্বর থেকে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত বলে গণ্য হবেন। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের অনুমোদন রয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি কালেক্টর সুজন চন্দ্র রায়। কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা সুলতানা জানান, জেলা প্রশাসক অফিসে থেকে এই বদলির আদেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, কর্ণফুলীর শিকলবাহা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কর্মরত (ভূমি সহকারি কর্মকর্তা) সুমন চৌধুরী চালান জালিয়াতির মাধ্যমে ভূমি উন্নয়ন করের ৩০ লাখ ৩৭ হাজার ৩৭৯ টাকা আত্মসাৎ করেন। সুমন চৌধুরী এর আগে রাঙ্গুনিয়া ভূমি অফিসের আওতাধীন ঘাগড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কর্মরত থাকার সময়ও ভূমি উন্নয়ন করের প্রায় ৭১ লাখ ৬৩ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সরকারি কোষাগারে উক্ত অর্থ জমা না দিয়ে চালান জালিয়াতির মাধ্যমে ১ কোটি ২ লাখ আত্মসাৎ করেন। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন তাৎক্ষণিক তার বিরুদ্ধে মামলা করে। অভিযুক্ত সুমন পলাতক রয়েছেন।
এছাড়াও বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, কর্ণফুলী উপজেলা ভূমি অফিসে আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে নেওয়া ১৯ জন কর্মচারীকে মৌখিক নির্দেশনা দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব কর্মচারীরা আবার সাড়ে তিন বছর বিভিন্ন ভূমি অফিসে কাজ করলেও কোন ধরনের বেতন ভাতা পাননি। ওদিকে, হঠাৎ একসঙ্গে এতজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বদলি ও বাতিল আদেশে নাগরিক সেবা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। যেখানেই দুর্নীতির বিষয়টি পাওয়া যাচ্ছে ও যারা দুর্নীতিতে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি এলএ শাখায় দুর্নীতি করার কারণে দুই দালালসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
ডিসি আরো বলেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে ইতোপুর্বেও ৫ জনকে জেলে পাঠানো হয়েছে। অনেককে বরখাস্ত করা হয়েছে ও দুর্গম এলাকায় বদলি করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন চট্টগ্রামের এ ধরনের দুর্নীতিবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে।
















