স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও ধর্ম অবমাননার অজুহাতে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ অব্যাহত রয়েছে। অথচ আমাদের সংবিধানে সকল নাগরিকের সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে যেখানে প্রত্যেক নাগরিক তার নিজস্ব ধর্ম বা বিশ্বাস পালনে সমান সুযোগ পাবে।
আজকে বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন, পূজা মন্ডপে হামলা করে মূর্তি ভাংচুর, হত্যা এবং নারী ও শিশুর প্রতি নির্যাতন সংবিধানে বর্ণিত নাগরিক অধিকার প্রতিনিয়ত লংঘন করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবীর।
এই ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করে রোকেয়া কবীর বলেন, আমি হতভম্ভ, লজ্জিত। শুধু ধর্মীয় সংখ্যালঘু নয়, বাংলাদেশের জনসংখ্যার অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী সমাজের উপরও অত্যাচার, নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর উপর বিভিন্ন সময়ে ধর্মীয় ও সামাজিকভাবে অত্যাচার, নির্যাতনের বিষয়টি বিদ্যমান।
তিনি সকল নাগরিকের সমান সুযোগ তৈরিতে রাষ্ট্রের পাশাপাশি নাগরিকদেরও কার্যকর ভূমিকা পালনে এগিয়ে আসার আহবান জানান। ‘আমাদের জীবন, আমাদের স্বাস্থ্য, আমাদের ভবিষ্যৎ’ প্রকল্পের ৩ দিনব্যাপী আয়োজিত বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহবান জানান।
আজ ২৫ অক্টোবর সোমবার কক্সবাজারের একটি হোটেলে ৩ দিনব্যাপী (২৫-২৭ অক্টোবর ২০২১) এই কর্মশালার আয়োজন করে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস)। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অর্থায়নে সিমাভি নেদারল্যান্ডস এবং বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের সহযোগিতায় পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থানীয় ১০টি সংগঠন- কিশোরী ও যুব নারীদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার, সহিংসতামুক্ত জীবনযাপন এবং মর্যাদাপূর্ণভাবে বেঁচে থাকার জন্য সচেতনতা এবং জীবন দক্ষতাবৃদ্ধি সংক্রান্ত বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
উদ্বোধনী পর্বে আরো বক্তব্য রাখেন সিমাভি বাংলাদেশের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মাহবুবা কুমকুম, নারী প্রগতি সংঘের প্রজেক্ট ম্যানেজার সঞ্জয় মজুমদার। এই সময় উপস্থিত ছিলেন হিল ফ্লাওয়ারের নির্বাহী পরিচালক ডা. নিলু কুমার তঞ্চঙ্গ্যা, টংগ্যার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক ডা. পরশ খীসা, অনন্যা কল্যান সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক ডনাইcÖæ নেলী, গ্রাউসের নির্বাহী পরিচালক চাইসিং মং, তহজিংডং এর নির্বাহী পরিচালক চিংসিংcÖæ প্রোগ্রেসিভ এর নির্বাহী পরিচালক সুচরিতা চাকমা, উইভ এর নির্বাহী পরিচালক নাইউcÖæ মারমা মেরী, কেএমকেএস এর নির্বাহী কমিটির সদস্য শাপলা ত্রিপুরা।
অনুষ্ঠানে রোকেয়া কবীর বলেন, আমাদের দেশের একটি বড় অংশ কিশোর-কিশোরী। তাদের স্বাস্থ্য, অধিকার নিশ্চিত করতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোও অবদান রাখছে। তারই অংশ হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামের কিশোরী ও যুব নারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং সহিংসতামুক্ত, মর্যাদাপূর্ণভাবে জীবন যাপনে দক্ষ করে তুলতে এই প্রকল্পটি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়নে প্রত্যেকে যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
৩দিনব্যাপী এই কর্মশালায় ‘আমাদের জীবন, আমাদের স্বাস্থ্য, আমাদের ভবিষ্যৎ’ প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংগঠনসমূহের মোট ৬৩ জন কর্মী অংশগ্রহণ করছেন।
















