চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি ঘোষনাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সকল নেতাকর্মীরা এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। আগামী ১৯ জুন নগরীর ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউট হলে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। ঐদিন সকাল ১০টায় সম্মেলন শুরু হবে। ঢাকা থেকে কেন্দ্রীয় নেতারা ভার্চুয়ারি সম্মেলনে অংশ নেবেন বলে জানান মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক এবং সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক এডভোকেট এ এইচ এম জিয়াউদ্দিন। গতকাল কেন্দ্র থেকে সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রথম দফায় গত ১১ এপ্রিল মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে লকডাউনের কারনে তারিখ পরিবর্তন করে ২৯ মে নির্ধারন করা হয়। দেশে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ না কমার কারনে আগামী ৩০ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয় লকডাউন। পরবর্তীতে লকডাউন আরো ১০ দিন বাড়িয়ে ১৬ জুন পর্যন্ত করা হয়। এই কারনে নগর স্বেচ্ছঠাসেবক লীগের সম্মেলন ভার্চুয়ালি করা হচ্ছে ১৯ জুন।
উল্লে¬খ্য ২০০১ সালে এডভোকেট জিয়া উদ্দিনকে আহবায়ক করে তিন
মাসের জন্য ৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হলেও দীর্ঘ ২০ বছর আর কোন সম্মেলন হয়নি ঐতিহ্যবাহী আওয়ামীলীগের এই অঙ্গ সংগঠনের।
২০ বছর পর সম্মেলনের তারিখ নির্ধারন হওয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছিল।
১৯ জুন সম্মেলনের পর ২০ জুন ঢাকা থেকে বহুল আলোচিত চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের নতুন কমিটি ঘোষণা হতে পারে। এমন খবর ছড়িয়ে পড়ায় নতুন কমিটির সম্ভাব্য পদ প্রত্যাশীরা গত কয়েকদিন ধরে ঢাকায় কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে লবিং-তদ্বিরে ব্যস্ত রয়েছেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি তাদের অনুসারীরাও ঢাকায় অবস্থান করার খবর পাওয়া গেছে।
এই ব্যাপারে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু জানান, চট্টগ্রাম অনেক বড় জায়গা, এখানে অনেক গুলো বিষয় আছে। আমরা চেষ্টা করছি কমিটি দেয়া জন্য।
আমরা সবার বায়োডাটা চেয়েছি। সবার বায়োডাটা পাওয়ার পর দেখে-শুনে সিদ্ধান্ত নেবো।
বর্তমানে নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের নতুন কমিটির শীর্ষ পদের জন্য নগর আওয়ামীলীগের প্রধানতম দুই গ্রুপের পাশাপাশি আরও দুটি উপ গ্রুপের নেতারাও শীর্ষ পদের ভাগ চান। উপ গ্রুপের দুই নেতা হলেন নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক অ্যাডভোকেট জিয়া উদ্দিন ও যুগ্ম আহবায়ক কেবি এম শাহজাহান। এই দুই নেতা তাদের কয়েকজন অনুসারীকে দলের শীর্ষ পদে দেখতে চান।
এদিকে নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ শীর্ষপদের জন্য নগর আওয়ামীলীগের প্রয়াত সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও নগর আওয়ামীলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দীনের অনুসারীদের জোর তৎপরতা চোখে পড়ার মতো।
প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারীদের মধ্যে সভাপতি পদে আলোচনায় আছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা দেবাশীষ নাথ দেবু ও লালখান বাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল হাসনাত বেলাল। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আলোচনায় আছেন আজিজুর রহমান আজিজসহ অনেকেই।
নগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন অনুসারীদের মধ্যে সভাপতি প্রার্থীদের মধ্যে আছে কমার্স কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো: হেলাল উদ্দিন, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কার্যকরী সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম বাপ্পী। সাধারণ সম্পাদক পদে আছে আইন কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুজিত দাশ, আবদুর রশিদ লোকমান।
এদিকে নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক অ্যাডভোকেট এ.এইচ.এম. জিয়া উদ্দিনের সাথে দীর্ঘদিন নগরীতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মকান্ডে নিজেদের সক্রিয় রেখেছেন মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি আজাদ খান অভি। এছাড়াও এই গ্রুপে আছেন এডভোকেট তসলিম উদ্দিন, শাহেদ আলী রানাও। অপরদিকে নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহবায়ক কে বিএম শাহজাহান তার অনুসারী দেবাশীষ আচার্য্য, জসীম উদ্দিন ও মনোয়ার জাহান মনিকে শীর্ষ পদে দেখতে চান বলে জানা গেছে। বর্তমান নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২১ সদস্যের কমিটির সদস্য নুরুল কবিরও পদ প্রত্যাশী বলে জানা গেছে।
এই ব্যাপারে গতকাল রাতে চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক এবং সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক এডভোকেট এ এইচ এম জিয়াউদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমরা যে কোনো মূল্যে সম্মেলন করতে চেয়েছিল। আমরা চেষ্টা করেছি সম্মেলনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম থেকে কমিটি হোক। শেষ পর্যন্ত আগামী ১৯ জুন ভার্চুয়ালি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সম্মেলনে সাবজেক্ট কমিটির মাধ্যমে নতুন কমিটি হবে।