কক্সবাজার জেলায় মুজিববর্ষে ১০১৮ জন ভূমি ও গৃহহীন পরিবার পেল প্রধানমন্ত্রীর উপহার স্বপ্নের বাড়ি। রোববার (২০ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় দ্বিতীয় ধাপে ভূমিহীন ও গৃহহীন এসব পরিবারকে বিনামূল্যে দুই শতক জমিসহ সেমি পাকা ঘর প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে তার প্রতিনিধি হিসেবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হাত থেকে জমির দলিল ও ঘরের চাবি বুঝে নেন ছিন্নমূল এসব পরিবার। দলিলে জমির মালিকানা স্বামী ও স্ত্রীর যৌথ নামে করে দেয়া হয়েছে। তাদের নামে স্থায়ী দলিলের পাশাপাশি নামজারি করে খাজনা দাখিলাও দেয়া হয়েছে।
গণভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানের সাথে ভার্চ্যুয়ালী সংযুক্ত হন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ। কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপকারভোগীদের জমির দলিল ও ঘরের চাবি তুলে দেয়া হয়।
কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুরাইয়া আক্তার সুইটির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এড. সিরাজুল মোস্তফা, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ, কানিজ ফাতেমা মোস্তাক এমপি, পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিন আল পারভেজ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, সহ-সভাপতি সাবেক সাংসদ অধ্যাপিকা এথিন রাখাইন, মুক্তিযোদ্ধা কামাল হোসেন চৌধুরী, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভূমি) মং এনুং মারমা, কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. মুজিবুল ইসলাম, জেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুর, ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান ও খুরুশকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন।
জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় ১ম পর্যায়ে এর আগে আরও ৩০৩ টি পরিবারকে নতুন বাড়ি দেয়া হয়েছে। আজ রোববার ১০১৮ পরিবারকে নতুন ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া আগামী ৩০ জুনের মধ্যে আরও ১০২ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে বিনামূল্যে জমিসহ ঘর প্রদান করা হবে। এ নিয়ে জেলায় মোট ১৪২৩টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুরাইয়া আক্তার সুইটি বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজন্ম লালিত স্বপ্ন ছিল বাংলার গরীব-দুঃখীদের মুখে হাসি ফোটাবার। তাই “মুজিববর্ষে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না” প্রধানমন্ত্রী এই মহতী স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরের লক্ষ্যে খাস জমি বন্দোস্ত করে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য গৃহ নির্মাণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, বিভিন্ন দেশে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের ঘরবাড়ি নির্মাণের জন্য সুদবিহীন ঋণ দেওয়ার নজির আছে। কিন্তু ভূমিহীন ও গৃহহীনদের ডেকে বাড়িঘর দেওয়ার নজির আর নেই।
প্রসঙ্গত, প্রতিটি সেমিপাকা ঘরে আছে দুটি রুম, একটি বড় বারান্দা, রান্নাঘর ও টয়লেট রয়েছে। পাশাপাশি সুপেয় পানি ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থাও আছে। এ ছাড়াও আত্মনির্ভরশীল করতে ওইসব পরিবারের সদস্যদের জন্য কর্মসংস্থানের জন্য নানা ধরনের প্রশিক্ষণও দেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।