ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের উপসর্গ নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ষাটোর্ধ নারী ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
এ কথা নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এসএম হুমায়ুন কবির।
বুধবার (২৮ জুলাই) রাতে মেডিকেল বোর্ড বসিয়ে বিষয়টি তারা নিশ্চিত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক।
এর আগে সন্ধ্যায় চমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ও করোনা বিষয়ক কোর কমিটির ফোকাল পার্সন ডা. সাজ্জাদ হোসেন জানিয়েছিলেন, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া ওই নারী আসলে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত কিনা তা নিশ্চিত হতে ৩ দিন সময় লাগবে।
জানা গেছে, দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়ার বাসিন্দা ৬০ বছর বয়সী ওই নারী করোনা আক্রান্ত হয়ে করোনামুক্তও হয়ে যান ১৫ জুলাইয়ে।
তবে এরপর তার দাঁতের ইনফেকশন দেখা দেওয়ায় তাকে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিছুদিন পরে তার চোখে ইনফেকশন দেখা দেয়। পরে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এমএ হাসান রোগীটিকে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের উপসর্গ থাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য বারডেম হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন।
এর মধ্যেই করোনা আক্রান্ত হয়ে ওই নারীর স্বামী মারা যান। এটি ছাড়াও লকডাউন পরিস্থিতির কারণে মাত্র ৪ দিন আগে ওই নারীকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন এই রোগীর চিকিৎসার জন্য এর মধ্যেই একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
এরআগে ঢাকার বারডেম হাসপাতালে চলতি বছরের গত ৮ মে ৪৫ বছর বয়সী এক রোগীর শরীরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এরপর গত ২৩ মে ৬০ বছর বয়সী আরেক জনের শরীরেও ছাত্রাকজনিত রোগটি শনাক্ত হয়। তারা দুজনেই করোনা আক্রান্ত ছিলেন। পরে করোনা মুক্ত হন তারা।
রোগটির বিষয়ে বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, বিরল এ সংক্রমণে মৃত্যু হার ৫০ শতাংশের মতো। বাঁচার জন্য অনেককে চোখও ফেলে দিতে হয়। কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার ১২-১৮ দিনের মাথায় এ রোগে আঘাত হানার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে মিউকরমাইকোসিসে ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি বলেও মনে করা হচ্ছে। মূলত করোনা আক্রান্ত রোগীকে মাত্রা না বুঝে স্টেরয়েড দিলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে। যার ফলে রোগীর ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) মতে, বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রে এই ছত্রাক ক্ষতিকর নয়। যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে তাদের শরীরে মিউকরমাইসিটিসের স্পোর প্রবেশ করলে ফুসফুস ও সাইনাস আক্রান্ত হতে পারে। যা পরে শরীরের অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে পড়ে।
সিডিসি’র মতে, এই বিরল ছত্রাকে আক্রান্তদের মৃত্যুহার ৫০ শতাংশ। কোভিড-১৯ ও ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগী, যারা স্টেরয়েড নিচ্ছেন, ক্যান্সার আক্রান্ত অথবা যারা অঙ্গ প্রতিস্থাপন করেছেন, তারা সবচেয়ে বেশি ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন।
















