চট্টগ্রাম: চিটাগং ইউনিভার্সিটি স্কুল অব ডিবেটের উদ্যোগে মাসব্যাপী কর্মশালা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ব্যবসায় অনুষদের অডিটোরিয়ামে বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুর ১২টায় শুরু হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চবির উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দীন খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন।
শামীম উদ্দীন খান বলেন, ‘আমাদের চিন্তার পরিধি বাড়াতে পড়াশোনার বিকল্প নেই। আমরা প্রশাসনে আসার পরে একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষাসহায়ক কার্যক্রম কীভাবে বৃদ্ধি করা যায়, সে বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছি। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে কীভাবে ভাইভার মুখোমুখি হতে হয়, কীভাবে প্রেজেন্টেশন প্রদান করতে হয়, আর এ কাজগুলো আপনি শিখতে পারবেন এসব উদ্যোগের মাধ্যমে।’
মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘সিইউএসডি থেকে আমি কখনো কর্মশালা করিনি। তবে তাদের থিমেটিক ক্লাসগুলোয় অনেক বছর ধরেই আমি একটি সেশন নিয়ে থাকি। একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর তার যে বৈষয়িক জ্ঞান প্রয়োজন হয়, তা সিইউএসডি খুবই অন্তর্ভুক্তিমূলকভাবে তাদের কর্মশালার মাধ্যমে দেয়ার চেষ্টা করে।’
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চবি ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তৈয়ব চৌধুরী, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. ইকবাল শাহীন খান, শাহজালাল হলের প্রভোস্ট ও মার্কেটিং বিভাগের প্রফেসর ড. ফুয়াদ হাসান, মার্কেটিং বিভাগের প্রফেসর ড. সজিব কুমার ঘোষ, সিইউএসডির সাবেক সহ-সভাপতি ও সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের আইন বিভাগের প্রভাষক মো. জাহেদুল ইসলাম ও চবি লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রভাষক মো. মাহবুবুর রহমান। এছাড়াও অনুষ্ঠানে চবি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) ও লোকপ্রশাসন বিভাগের সভাপতি প্রফেসর মমতাজ উদ্দিন আহমদ, চিটাগং ইউনিভার্সিটি স্কুল অব ডিবেট ক্লাবের সভাপতি ইলহাম শারার ও সাধারণ সম্পাদক আকলিমা খাতুন উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আকলিমা খাতুন।
মোহাম্মদ তৈয়ব চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের দেশ নতুন করে বিনির্মাণের জন্য যুক্তিশীল কিছু মানুষ প্রয়োজন। আর এ যুক্তিশীল মানুষ ও যুক্তিশীল নেতা তৈরি করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে সিইউএসডি।’
তিনি ১৬তম কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের সফলতা কামনা করেন।
সজিব কুমার ঘোষ বলেন, ‘ডিবেটের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী তার চিন্তার গভীরতায় পৌঁছতে পারে। এতে তাকে সাহায্য করে বিশ্লেষণধর্মী চিন্তা। আর এ বিশ্লেষণধর্মী চিন্তা করতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে বিতর্ক।’
ভবিষ্যৎ জীবন গড়ার জন্য, দেশের ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে এ ধরনের উদ্যোগগুলো দারুণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি মনে করেন।
মো. মাহবুবুর রহমান তার ৬ষ্ঠ থিমেটিক ডিবেটের সুন্দর অভিজ্ঞতার স্মৃতিচারণ করেন এবং ২০১৪-২০১৯ সালের কিছু বিতর্ক ও অনুষ্ঠান নিয়ে আলোচনা করেন।
চিটাগং ইউনিভার্সিটি স্কুল অব ডিবেটের সদস্য তাইফুল ইসলাম মাহিন ও অংকিতা চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় কর্মশালাটি শুরু হয়। এরপর ১৬তম থিমেটিক বিতর্ক কর্মশালা ও চ্যাম্পিয়নশিপের শিক্ষার্থীরা ক্লাবের প্রতি তাদের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন এবং ১৫তম থিমেটিক বিতর্ক কর্মশালার উদীয়মান বিতার্কিকরা তাদের এক বছরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। সঞ্চালনায় আরও ছিলেন ইয়াকীন রায়হান, মো. মোজাম্মেল হোসেন, তানজিনা ও অরভা।
বিকাল ৩টায় সিইউএসডির সাবেক সভাপতি ও এশিয়ান পার্লামেন্টারি সেশনের অধিবেশন বক্তা ফারহানা খান যূঁথী নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য পরিচালিত অধিবেশনে কীভাবে বাংলা সংসদীয় বিতর্ক করতে হয়, কীভাবে বিতর্কের গাঁথুনি সুন্দর করা যায় তা উপস্থাপন করেন। সবশেষে, সিইউএসডির সভাপতি ইলহাম শারার উপস্থিত সকল শিক্ষক, অতিথি ও ১৬তম থিমেটিক বিতর্ক কর্মশালার সকল অংশগ্রহণকারীকে ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানান এবং একই সাথে অনুষ্ঠানকে সফল করার জন্য ক্লাবের সকল সদস্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, এ বছর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অব ডিবেটের ১৬তম থিমেটিক বিতর্ক কর্মশালায় প্রায় ৩৫০ জন শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করেছেন।