মাদক নির্মূলে এমপি-মন্ত্রীসহ সব শ্রেণির মানুষকে ডোপ টেস্টের আওতায় নিয়ে আসার সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। রোববার (৭ নভেম্বর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকের কার্যবিবরণীতে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
এর আগে গত মাসের শুরুতে সংসদীয় কমিটির বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। রোববারের বৈঠকে ওই কার্যবিরণীর অনুমোদন দেওয়া হয়।
এতে মাদক নির্মূলে এমপি-মন্ত্রীসহ সব শ্রেণির মানুষকে ডোপ টেস্টের আওতায় নিয়ে আসার প্রস্তাব দেন কমিটির সভাপতি শামসুল হক টুকু।
বৈঠকে র্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কক্সবাজার এলাকার বিভিন্ন মাদ্রাসা, স্কুল ও কলেজের শিক্ষকরা মাদক ব্যবসায় জড়িত। সেখানকার স্থানীয়রা এটাকে পার্টটাইম ব্যবসা মনে করে।
‘মিয়ানমার সীমান্তে ইয়াবা রোধ করা একটু কঠিন হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদা সতর্ক রয়েছে। মাদকসেবীরা প্রথমে শখের বসে মাদক সেবন করে এবং পরবর্তীতে মাদকাসক্ত হয়ে গেলে চোরাকারবারিরা তাদের খুচরা বিক্রেতা হিসেবে ব্যবহার করে।’
তিনি বলেন, শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নয়, সব শ্রেণির জনগণ মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলে এটি নির্মূল করা সম্ভব হবে। বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার কারণে সুন্দরবনের বনদস্যু ও জলদস্যুরা আত্মসমর্পণ করেছে। মাদক পাচারকারীদের জন্যও এ ধরনের ব্যবস্থা করা গেলে সফলতা আসবে।
পুলিশের আইজি বেনজীর আহমেদ বলেন, মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু প্রলম্বিত বিচার, বিচারক স্বল্পতা এবং সহজে জামিনে বের হয়ে যাওয়া যেন চিরাচরিত নিয়ম। জামিনে মুক্তি পেয়ে আবার সেই মাদক ব্যবসায় ফিরে আসে তারা। একটি মাদক মামলার চূড়ান্ত রায় হতে প্রায় ১২ বছর লেগে যায়। দেশে কোনো মাদক তৈরি বা উৎপাদন হয় না। সবই আসে দেশের বাইরে থেকে।
শামসুল হক টুকু বলেন, ডোপ টেস্ট প্রথা চালুর কারণে মাদকাসক্তরা ইদানীং সতর্ক হচ্ছে। এমপি-মন্ত্রী, রাজনীতিবিদ, বিচারপতি, আইনজীবী, সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক সর্বক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট চালু রাখার বিষয়টি বিবেচনা করা প্রয়োজন। ডোপ টেস্টের কারণে সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পারলে সমাজের সবাই সচেতন হবেন।
তবে সভাপতি সব শ্রেণিকে ডোপ টেস্টের আওতায় আনার প্রস্তাব করলেও তা আংশিক সুপারিশ আকারে নিয়ে আসা হয়। বৈঠকে ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সব সরকারি সংস্থা বা দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়মিত ডোপ টেস্টের আওতায় আনতে হবে হবে’ বলে সুপারিশ করা হয়।
বৈঠকে কমিটির সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, পীর ফজলুর রহমান, নূর মোহাম্মদ, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ এবং রুমানা আলী অংশ নেন।
















