আনোয়ারা উপজেলায় গ্রাহকের লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করা ও টাকা চাওয়াই উল্টো গ্রাহককে মামলার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পারভীন আক্তার নামে রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড (আনোয়ারা শাখা) এর এক সাবেক কর্মকর্তা বিরুদ্ধে ।
শনিবার (১২ জুন) পারভীন আক্তারের বিরুদ্ধে বীমা একাউন্ট করার নাম করে সাধারণ মানুষের লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ তুলে আনোয়ারা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী মোঃ রিয়াদ নামে এক কিশোর। রবিবার বীমার টাকা ফেরতের দাবিতে প্রতিষ্ঠানটির সামনে প্রায় অর্ধশত ভুক্তভোগী জড় হয়ে আন্দোলন করতে দেখা যায়।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয় ,আমার আম্মু তাহেরা বেগম রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের একজন পলিসি গ্রাহক। পারভীন (৪২),তার স্বামী কাজী মোঃ আলমগীর (৪৪) এবং তার ছেলে মোঃ ফাহিম (২৪) তিন জনই সংঘবদ্ধভাবে আমার আম্মুসহ আরো বহু সাধারণ মানুষকে উচ্চ লাভের প্রলোভন দেখিয়ে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে পলিসি করানোর মাধ্যমে আমাদের টাকা আত্মসাৎ করেছে। রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের কর্মরত পারভীন আক্তার চাকরি ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি আমরা জানতে পেরে আমরা তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি এবং তাঁর পরিবার আমাদের সাথে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় । রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের আনোয়ারা শাখার অফিসে গিয়ে জানতে পারি ওনি গ্রাহকদের কিছু টাকা জমা দিয়ে বাকি টাকা জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করার কারণে চাকরিচ্যুত করা হয় । শনিবার (১২ জুন) জমা দেওয়া টাকা উত্তোলনের জন্য পারভীন আক্তারের সাথে দেখা করতে তার নিজ বাড়িতে গেলে সে আমাদের সাথে চরম অসদাচরণ করে । আমাদের ধারালো দা,চুরি নিয়ে মারতে উদ্যত হোন এবং আমাদের লুটপাট ও নারী নির্যাতনের মামলা দিয়ে হয়রানি করবে বলেও হুমকি দেন।
জানা যায়,অভিযুক্ত পারভীন ৬নং বারাখাইন ইউনিয়নের ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক মহিলা মেম্বার ছিলেন এবং তার ছেলে অভিযুক্ত ফাহিম কিছুদিন আগে মাদক মামলায় গ্রেফতার হয়। এছাড়াও ফাহিমের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
ঝর্ণা শীল নামে এক ভুক্তভোগী চট্টগ্রাম নিউজ ডটকম প্রতিবেদককে জানায়, আমি রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে পারভীন এর মাধ্যমে মাসে ২শ টাকা করে ৩বছরী একটি বীমা করেছি । পারভীন এবং তার জামাই আলমগীর প্রতি মাসে মাসে বাড়িতে এসে টাকা নিয়ে যাইতো । বীমার মেয়াদ ৩বছর শেষ হয়েছে কিন্তু এই ৩ বছরে বীমা অফিসের চেহেরাও দেখিনি । ওনার ডকুমেন্ট ও টাকা জমার রশিদের বিষয়ে জানতে তিনি বলেন,
রশিদ বলতে সর্বশেষ মাসে টাকা জমার রশিদটাই আছে বাকি কোন রশিদ দে নাই।
এছাড়াও পারভীন আক্তার এর বিষয় এলাকায় খবর নিতে গেলে জানা যায় তাঁর ও তাঁর স্বামীর দানবীর চরিত্রের কথা । নানা অপকর্ম ও অপরাধ এর জন্য এলাকায় বিখ্যাত এরা । কত মানুষের টাকা আত্মসাৎ করেছে তার হিসাব অগনিত। এদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস ও করেনা স্থানীয় কেউ।
অভিযুক্ত পারভীনের সাথে এই বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়ায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
পারভীনের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের আনোয়ারা শাখার ম্যানেজার মোহাম্মদ সেলিম সাথে কথা হলে তিনি জানান, পারভীন আমাদের একজন কর্মকর্তা ছিলো, গত ১বছর আগে গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করার বিষয়টি জানতে পেরে ওনাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। চাকরি হারানোর পরও পারভীন ইন্স্যুরেন্সের নাম ভাঙিয়ে গ্রাহকদের থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
থানায় অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে আনোয়ারা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সৈয়দ ওমর বলেন,ইন্স্যুরেন্স নামে টাকা আত্মসাতের বিষয়ে আমরা একটা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি যাতে ২০ জন ভুক্তভোগী সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন । এই বিষয়ে তদন্ত চলছে।