চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে চারটি বিদেশি পিস্তল ও একটি রিভলবারসহ বিপুল পরিমাণ গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার (১০ নভেম্বর) ভোরে এসব অস্ত্র-গুলি উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন রাউজানের নোয়াপাড়া চৌধুরীহাটের আইয়ুব আলী সওদাগরের বাড়ির মুহাম্মদ শওকতের ছেলে মো. সাকিব (২০) ও মুহাম্মদ সোবহানের ছেলে মো. শাহেদ (২৫)।
তারা দুইজন সম্প্রতি প্রাইভেট কারে গুলি চালিয়ে বিএনপি কর্মী আবদুল হাকিমকে হত্যার মামলার আসামি। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে এসব অস্ত্র-গুলি উদ্ধার হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অভিযানে হাকিম হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ৪টি বিদেশি পিস্তল, ১টি রিভলভার, ১ টি চায়না রাইফেল, ১ টি শট গান, ৪৯ রাউন্ড রাইফেলের গুলি (৭.৬২), ১৭ রাউন্ড শর্টগানের কার্তুজ, ১৯ রাউন্ড পিস্তলের গুলি (৭.৬৫), ৭টি ম্যাগজিন, ২টি দেশীয় রামদা, ১টি রকেট ফ্লেয়ার, ৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ২৫০ গ্রাম গাঁজা (আনুমানিক) এবং ৯৬ হাজার নগদ টাকা।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের হাটহাজারী উপজেলার মদুনাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের মাত্র ২০০ মিটার দূরে একটি প্রাইভেট কারে থাকা আবদুল হাকিমকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে একদল অস্ত্রধারী। তিনি রাউজানে নিজের খামার থেকে চট্টগ্রাম নগরে ফিরছিলেন। মোটরসাইকেলে আসা ওই অস্ত্রধারীদের গুলিতে আবদুল হাকিমের গাড়িটির চালক মুহাম্মদ ইসমাইলও (৩৮) আহত হন। হাকিমের শরীরে ১০টি গুলির আঘাতের চিহ্ন পায় পুলিশ। এ ছাড়া, গাড়িতে ২২টি গুলির চিহ্ন ছিল। গুলিতে গাড়ির সামনের দুটি চাকাও ফুটো হয়ে যায়। ঘটনার দুই দিন পর আবদুল হাকিমের স্ত্রী তাসফিয়া আলম বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হাটহাজারী থানায় মামলা করেন।
হত্যার ঘটনায় গত সপ্তাহে চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা হলেন আবদুল্লাহ খোকন, মুহাম্মদ জিয়াউর রহমান, মুহাম্মদ মারুফ ও মুহাম্মদ সাকলাইন। সে সময় একটি একনলা বন্দুক ও একটি এলজি উদ্ধার হয়। ওই আসামিদের তথ্যেই সাকিব ও শাহেদকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, বিএনপি কর্মী ও ব্যবসায়ী আবদুল হাকিমকে ভাড়াটে খুনি দিয়ে হত্যা করানো হয়েছে। কর্ণফুলী নদীর পাড়ের বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ ও স্থানীয় রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। খুনের ঘটনায় সন্ত্রাসীরা দুটি দলে ভাগ হয়ে অংশ নেয়।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এসএসপি) মুহাম্মদ রাসেল বলেন, ‘নতুন করে গ্রেফতার দুইজনকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। যেসব অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে, তা খুনে ব্যবহৃত হয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। গ্রেফতার দুইজনও হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছেন।’
















