দীর্ঘদিনের দাবি ২০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া ও চিকিকৎসা ভাতা বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন জারিতে কালক্ষেপণ করায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষকরা। আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে এই প্রজ্ঞাপন জারি করা না হলে তারা ১২ অক্টোবর থেকে ক্লাস বর্জনসহ লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) একাধিক শিক্ষক নেতা এসব তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে গত ১৩ আগস্ট রাজধানীতে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের আহ্বানে শিক্ষক সমাবেশ ও আন্দোলন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিন জোটের প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠকে সরকারের তরফ থেকে ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়ার (যা ন্যূনতম ৩ হাজার টাকা) দাবি মেনে নিয়ে শিগগিরই তা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশের আশ্বাস দেওয়া হয়। ফলে শিক্ষকরা আশ্বাসের প্রেক্ষিতে আন্দোলন স্থগিত করেন। এর মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষক নেতাদের কাছে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও কারিগরির শিক্ষকদের ২০ শতাংশ এবং অধিদপ্তরের কাছে ২০ শতাংশ, ১৫ শতাংশ, ১০ শতাংশ ও ৫ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়ার হিসাব চাওয়া হয়। তবে শিক্ষক নেতাদের সাথে বৈঠকে ২০ শতাংশের হিসাব চাওয়া হলেও পরবর্তী অধিদপ্তরের কাছে ৫ শতাংশ পর্যন্ত হিসাব চাওয়ার বিষয়টি শিক্ষকদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এছাড়াও শিক্ষা মন্ত্রণালয় অধিদপ্তর থেকে হিসাব পেলেও সেটা সামারি আকারে এখনো অর্থ মন্ত্রণালয়ে না পাঠানোয় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন শিক্ষকরা।
তাদের দাবি, সরকারের সদিচ্ছা থাকলেও কিচু অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নেতা ও আমলার যোগসাজশে বাড়ি ভাড়া ২০ শতাংশ থেকে কমানো এবং প্রজ্ঞাপন জারিতে কালক্ষেপণ করা হচ্ছে।
শিক্ষক নেতারা বলছেন, ২০ শতাংশের কম কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না এবং ১০ অক্টোবরের আগে প্রজ্ঞাপন জারি করা না হলে ১২ অক্টোবর থেকে ঢাকায় অবস্থান ও ক্লাস বর্জনের মত কঠোর কর্মসূচি নেওয়া হবে। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন।
এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অবসরপ্রাপ্ত ও বড় একটি রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত একজন শিক্ষক নেতা ২০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়ার বিষয়টি বাস্তবায়নে নানা স্তরে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। ফলে কর্মকর্তারাও বিষয়টি নিয়ে দ্বিধায় ভুগছেন।
তাদের অভিযোগ, ওই নেতার পরামর্শ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত না নিলে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে হেনস্তার চেষ্টা করছেন। ফলে কর্মকর্তারাও বিষয়টি নিয়ে সরকারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন।
উল্লেখ্য, বর্তমানে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মাত্র ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া এবং ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। এত কম টাকা দিয়ে বর্তমানে কোথাও বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা পাওয়া সম্ভব নয়। ফলে, ২০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া ও দেড় হাজার টাকা চিকিৎসা ভাতার দাবি জানিয়ে আসছেন শিক্ষকরা। একই সাথে দুই ঈদে উৎসব ভাতাও ১০০ শতাংশ দাবি শিক্ষকদের।