এএইচএম কাউছার: বাংলাদেশে প্রতি বছর জুলাই মাসে শিক্ষার্থীদের উপর মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ও সহিংসতা বেড়ে যায়। এই মাসটি যেন শিক্ষার্থীদের জন্য শোকাবহ স্মৃতি নিয়ে আসে। সড়ক, রাজপথ কিংবা আকাশপথ-কোথাও যেন নিরাপদ নয় তাদের জন্য।
গত ১৫ বছরে জুলাইয়ে ঘটে যাওয়া মিরসরাই ট্র্যাজেডি, কোটা সংস্কার আন্দোলনের দমন-পীড়ন ও মাইলস্টোন কলেজের বিমান দুর্ঘটনা দেশের শিক্ষা নিরাপত্তার বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
২০১১ সালের ১১ জুলাই চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট শেষে মিনি ট্রাকে বাড়ি ফিরছিলেন ৪৫ জন শিক্ষার্থী। বড়তাকিয়া-আবুতোরাব সড়কের সৈদালী এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডোবায় পড়ে গেলে সবাই নিহত হন। মিরসরাই ট্র্যাজেডি নামে স্মরণীয় এই দুর্ঘটনায় দেশের সড়ক নিরাপত্তার দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
১৩ বছর পর, জুলাই ২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন (বৈছাআ) হলো বাংলাদেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠন। তারা কোটা সংস্কার দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পুলিশি লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ ও রাবার বুলেটের মধ্যে পড়ার কারণে হাজারো শিক্ষার্থী আহত হন। সরকারি দমন-পীড়নের ফলে আন্দোলনকারীদের মধ্যে প্রাণহানিরও অভিযোগ ওঠে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই মাসজুড়ে অন্তত ১ হাজার শিক্ষার্থী নিহত এবং ২০ হাজারেরও বেশি আহত হয়।
এ বছর জুলাইয়ে রাজধানীর উত্তরা এলাকায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান মাইলস্টোন কলেজের ভবনে বিধ্বস্ত হয়। এতে অন্তত ৩১ শিক্ষার্থী নিহত এবং ১৫০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘এসব ঘটনার পেছনে রয়েছে প্রশাসনিক দুর্বলতা, নিরাপত্তার অভাব এবং মৌলিক সচেতনতার ঘাটতি। তারা সরকারের কাছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের জন্য তৎপর হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন।’
সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন ওঠেছে, ‘এই মর্মান্তিক ঘটনার ধারাবাহিকতা কি নিছক কাকতালীয়? নাকি এর পেছনে রয়েছে মৌসুমী অসতর্কতা, প্রশাসনিক ব্যর্থতা বা রাষ্ট্রীয় সিস্টেমের ঘাটতি?’