চট্টগ্রাম: রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, ‘চট্টগ্রামের যে জলাবদ্ধতা এটি একেবারে মানবসৃষ্ট সমস্যা। আগে যারা নগর পিতা, সিডিএর চেয়ারম্যান ছিলেন তারাই এই জলাবদ্ধতা সৃষ্টির জন্য দায়ী।’
মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুর সাড়ে ১২টায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর নিজস্ব অর্থায়নে বির্জাখাল খনন ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের অগ্রগতি পরিদর্শন শেষে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমাবেশে ফাওজুল কবির আরো বলেন, ‘আমি চট্টগ্রামে প্রাইমারি, হাই স্কুল ও চট্টগ্রাম কলেজে পড়েছি। কিন্তু আমি কখনোই এ রকম জলাবদ্ধতা দেখিনি। খাল দখল করে বাড়ি, অফিস, মার্কেট করে ফেলা হয়েছিল। আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর এসব ভেঙে এখন আবারও খালে পরিণত করার কাজ করছি। আমরা সবাইকে সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে চাই।’
সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য মুহাম্মদ নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সিডিএর চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিম।
ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘খননের পর সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, খাল পরিষ্কারের পর আবারও ময়লা ফেলা হচ্ছে। সেটা করলে খাল পরিষ্কার করে লাভ নেই। আমরা ১০ হাজারের মতো ডাস্টবিন দিয়েছি। এখন থেকে সেগুলোতে ময়লা ফেলবেন। আমরা বিভাগীয় কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছি ময়লা বিনে না ফেললে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য। বিনগুলোকে নিজেদের যতদ্রুত করতে হবে। বিন হারিয়ে গেলে যার এলাকা থেকে হারিয়ে যাবে তাকে জরিমানা দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে যা কিছু করা দরকার সবকিছু আমরা করব। যে বা যারা কাজ করতে আগ্রহী সবাইকে আমরা কাজ করার সুযোগ দিয়েছি। এখন নাগরিকদের পালা, খালকে পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব তাদের। একদিকে খাল খনন করার পর আরেক দিকে ময়লা ফেলা হলে কাজের কাজ কিছু হবে না।’ উপদেষ্টা নগরবাসীর কাছে জলাবদ্ধতা নিরসনের সহযোগিতা কামনা করেন।’
শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘সবাইকে নিয়ে আমরা নগরকে গ্রিন, হেলদি সিটি করার কাজ করছি। দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে একসাথে নিয়ে কাজ করতে চাই। তাহলেই আমরা শহরকে সুন্দর রাখতে পারব। বির্জাখালের খনন ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করায় আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘২৪ দিনের মাথায় উপদেষ্টা কার্যক্রম পরিদর্শনে আসায় আমাদের নেতাকর্মীরা উৎসাহিত হয়েছেন। এটা তিন হাজার ফিট, আমরা প্রায় ১ হাজার ৮০০ ফিট কাজ শেষ করেছি। বাকি অংশটুকু আমরা ঈদুল আজহার আগে শেষ করতে পারব, ইনশাআল্লাহ।’
এলাকাবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা এখন যেভাবে সহযোগিতা করছেন, আগামী দিনের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে সেভাবে সহযোগিতা করবেন।’
সমাবেশের আগে ফাওজুল কবির খান বির্জাখালের খনন ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। কাজের অগ্রগতি দেখে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।