চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের কর্ণফুলী শিকল বাহা ক্রসিং পাড়াবিলে শুরু হয়েছে তিন দিনের সুন্নাতে ভরা বিভাগীয় ইজতেমা।
ইজতেমার প্রথম দিনেই দেশের দূর দূরান্ত থেকে মুসল্লির ঢল নেমেছে। চলছে ইমান ও আক্বিদা, আমল, আখলাকসহ বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক আলোচনা।
কুরআন ও সুন্নাত প্রচারের বিশ্বব্যাপী অরাজনৈতিক দ্বীনী সংগঠন দাওয়াতে ইসলামী বাংলাদেশের উদ্যোগে বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকাল ১০টায় কোরআন তেলাওয়াত ও নাতে রাসুলের (সা.) মধ্য দিয়ে শুরু হয় ইজতেমার আনুষ্ঠানিক পর্ব।
ফজরের নামাজের পর থেকে নামাজের ফজিলত, সময়ের গুরুত্ব, সন্তানের সুশিক্ষা ও পরিবারের সংশোধন ইত্যাদি বিষয়ে কুরআন-হাদিস দিয়ে আলোচনা করা হয়। আলোচনায় অংশ নেন দাওয়াতে ইসলামীর মুবাল্লিগ মাওলানা মুহাম্মদ এনাম আত্তারি, মাওলানা সাইফুল ইসলাম আত্তারি, মাওলানা সৈয়দ আলফে সানি আত্তারি, মাওলানা কাওসার কাদেরি, মাওলানা আবেদিন কাদেরি প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ‘আল্লাহ আপন প্রিয় মাহবুবের (সা.) উম্মতকে সকল যুগে অতুলনীয় মেধাসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব দান করেছেন। তারা কেবল নিজেরাই সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করার দায়িত্ব সর্বোত্তম পন্থায় আদায় করেননি, বরং মুসলমানদের নিজের এবং সমগ্র মানবজাতির সংশোধনের চেষ্টা করার মন-মানসিকতাও দিয়েছেন। তাই আমাদেরকেও কুরআন হাদিসের আলোকে নিজেকে, এবং অন্যদের সংশোধনের চেষ্টা করে যেতে হবে। যাতে ধর্মীয় শিক্ষায় মানবিক মানুষ হতে পারি। আর সেটা সম্ভব হলে দেশে মব, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, হানাহানি ও সমাজে কোনো প্রকার অশান্তি থাকবে না।’
মোবাল্লিগগণ বলেন, ‘আমাদের প্রিয়নবী (সা.) যেভাবে বলেছেন, আমাদের সেভাবেই চলতে হবে। জীবন গঠনে শুদ্ধ নিয়তের পাশাপাশি হালাল রুজি অর্জন করতে হবে। আপনার ইমান-আক্বিদা পরিপূর্ণ হতে হবে। যে কাজই করেন না কেন সেটা আল্লাহ ও তার প্রিয় হাবিবের সন্তুষ্টির্জনের জন্য হতে হবে। আপনি যে ইবাদতই করেন না কেন তা মহান আল্লাহর দরবারে কবুল হবে। ফরজ নামাজের পাশাপাশি নফল নামাজ, কুরআন তেলাওয়াত, দান সাদকায় মনযোগী হতে হবে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে। উত্তম আখলাকের অধিকারী হতে হবে।’
তারা বলেন, ‘প্রিয় নবীর (সা.) কৃপাদৃষ্টি, সাহাবায়ে কিরামের বরকত, আওলিয়া কিরামের বরকতময় সম্পর্ক, ওলামা-মাশায়েখে আহলে সুন্নাতের স্নেহ এবং আমিরে আহলে সুন্নাতের দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম ও মাযহাব মিল্লাত সকল তরিক্বত ও সর্বস্তরের সুন্নি মুসলমানের আন্তরিক ভালোবাসা ও সহযোগিতায় দাওয়াতে ইসলামী বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে মানুষদের সংশোধনের কাজ করে যাচ্ছে। যার কারণে অরাজনৈতিক এই সংগঠনটি আজ পৃথিবীর প্রায় ২০০ দেশে পৌঁছে গেছে।’
এই ইজতেমা শেষ হবে শুক্রবার (২ মে) জুমার নামাজ ও আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে।
তিন দিনে দেশ-বিদেশের সুন্নি স্কলার, আলেমে দ্বীন ইসলামের মৌলিক বিষয়, আকায়েদ, আমল ও আখলাক নিয়ে সারগর্ভ বয়ান করবেন।
দাওয়াতে ইসলামী বাংলাদেশ জিম্মাদার (মিডিয়া বিভাগ) মুফতি জহিরুল ইসলাম মুজাদ্দেদী আত্তারী বলেন, ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী, সুফিবাদ ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আক্বিদায় বিশ্বাসী, বিশ্বব্যাপী অরাজনৈতিক সংগঠন হলো দাওয়াতে ইসলামী। সারাবিশ্বের মতো এ দেশে ২০১৫ সাল থেকে তিন দিনের এই ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।’