পটিয়া, চট্টগ্রাম: ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলায় গুলিবিদ্ধ হন ভাটিখাইন ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মো. সেলিম (৪৮)। তার পর থেকেই ডান হাত অকেজো যায় তার। সম্প্রতি তার হাতে পচন ধরেছে। চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার জন্য বলেন।
বর্তমানে তিনি যন্ত্রণায় দিনাতিপাত করছেন।
সেলিম ভাটিখাইন ইউনিয়নের বদিউল আলম তালুকদার বাড়ির মৃত নুরুল হকের পুত্র।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন বিএনপির প্রার্থী এনামুল হক এনামের ধানের শীষ প্রতীকের এজেন্ট ছিলেন সেলিম। তিনি ভাটিখাইন মির্জা আলী লেদু শাহ কেন্দ্র বসেছিলেন।
সেদিন একতরফা নির্বাচনে দুপুরে ভোটকেন্দ্র থেকে সেলিমকে টেনেহিঁচড়ে বের করে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। বিএনপি প্রার্থীর এজেন্ট হওয়ার কারণে জনসমক্ষে পুলিশ তার ডান হাতে বেশ কয়েকটি গুলি করে বলে অভিযোগ করে স্থানীয়রা।
এ সময় রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পরে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেয়া হয়। প্রায় দেড় মাস সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন সেলিম। তখন তার হাতে একটি অপারেশনও করা হয়। তার পর থেকে এ পর্যন্ত পাঁচ বার অপারেশন করা হয়েছে তার ডান হাতে।
এখন পর্যন্ত চিকিৎসা বাবদ ১২ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে সেলিমের। কিন্তু, গেল ছয় বছরে পটিয়া উপজেলা বিএনপির নেতাদের কাছ থেকে মাত্র ৪০ হাজার টাকা সহযোগিতা পেয়েছেন বলে জানান তিনি।
মো. সেলিম বলেন, ‘আমি গেল ছয় বছর ধরে এ যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছি। আর সহ্য হচ্ছে না আমার। চিকিৎসা করতে গিয়ে আমি সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি। আমার ডান হাতটি থেকেও না থাকার মত। আমার হাতে পচন ধরেছে। এ চিকিৎসা দেশে সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। ভারতে কিংবা সিঙ্গাপুরে এর উন্নত চিকিৎসা সম্ভব। এখনো হাতে গুলি ও প্লেট রয়েছে। তাই, আমি বিএনপি ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। যাতে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমি সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাই। পূর্বের মত পারিবারিক, রাজনৈতিক জীবনে যাতে সচল হতে পারি।’