চট্টগ্রাম: ডেঙ্গু প্রতিরোধে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র শাহাদাত হোসেন ডেঙ্গু ম্যানেজমেন্ট সেল চালুসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি জনগণের সহায়তা চেয়েছেন। শুক্রবার (৮ নভেম্বর) দক্ষিণ খুলশী সিটি কর্পোরেশন ভিআইপি হাউজিং সোসাইটি জামে মসজিদের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করার পর স্থানীয় জনগণের সাথে মতবিনিময়কালে এ সহায়তা চান মেয়র।
এ সময় মেয়র বলেন, ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধে মেমন হাসপাতালকে ডেঙ্গু ম্যানেজমেন্ট সেল হিসেবে ঘোষণা করেছি। সেখানে কারো ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শক্রমে বিনামূল্যে এনএস ১ অ্যান্টিজেন টেস্ট করতে পারবেন। এছাড়া, আক্রান্তদের সেবা দিতে প্রস্তুত আছেন আমাদের চিকিৎসকরা। আমাদের সবাইকে মিলে চট্টগ্রামকে একটি সবুজ শহরে পরিণত করতে হবে। এর অর্থ শুধু গাছ লাগানোই নয়, বরং আমাদের আশেপাশে পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা ও ডেঙ্গু জাতীয় রোগ প্রতিরোধ করাও।’
শাহাদাত হোসেন ডেঙ্গু প্রতিরোধে চসিকের নেওয়া পদক্ষেপের ওপর বিশেষভাবে আলোকপাত করেন।
তিনি জানান, ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিভিন্ন ওয়ার্ডে সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম চালু করা হয়েছে এবং মশার লার্ভা ধ্বংস করতে স্প্রে ব্যবহার করা হচ্ছে।
এডিস মশার বিস্তার রোধে নগরবাসীর সহায়তার প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জমে থাকা স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশার লার্ভা জন্মায়, যা ডেঙ্গু বিস্তারের জন্য দায়ী। এজন্য বাড়ির ছাদে বা বারান্দায় ফুলের টব বা পানির টব খালি রাখার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।’
পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে গাফিলতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়ে মেয়র বলেন, ‘পরিচ্ছন্ন কর্মীদের দৈনিক কাজের মনিটরিং করা হচ্ছে। এখন থেকে রাতে ময়লা পরিষ্কার কার্যক্রম পরিচালিত হবে; যাতে দিনের বেলায় নাগরিকদের ভোগান্তি কম হয়। তার মতে, এভাবে পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে চট্টগ্রামকে একটি গ্রীন ও হেলদি সিটিতে পরিণত করা সম্ভব।’
মেয়র আরো বলেন, ‘তিনি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চান।’
তিনি জনগণকে উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে বলেন এবং কোন অনিয়ম লক্ষ্য করলে তা সরাসরি মেয়রকে জানাতে বলেন।
ভবিষ্যতে চট্টগ্রামকে একটি আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত করার লক্ষ্যে মেয়র প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে বলেন, ‘চট্টগ্রামের মধ্যে একটি বিশ্ব মানের পর্যটন শহর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ জন্য পর্যটন খাতের বিকাশ আমার অন্যতম লক্ষ্য। আমাদের পরিবেশ রক্ষা করে এবং অবকাঠামো উন্নয়ন করে আমরা আরও বেশি পর্যটক আকর্ষণ করতে পারব এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারব ‘
‘চট্টগ্রাম শুধু আমার নয়, এটি ৭০ লাখ মানুষের শহর। এই শহরের উন্নয়নে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। পাহাড় কাটা বন্ধে সবার সচেতনতা এবং পর্যটন শিল্পের বিকাশে ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তোলা প্রয়োজন। আমাদের পাহাড় ও সমুদ্র রক্ষা করে আন্তর্জাতিক পর্যটকদের আকৃষ্ট করার সুযোগ রয়েছে, যা দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।’
‘সিটি উন্নয়নের জন্য আমাকে দায়িত্ব দেয়ায় আমি কৃতজ্ঞ এবং নগর পিতা নয়, সেবক হয়ে কাজ করতে চাই’- এ প্রতিজ্ঞা নিয়ে তিনি উপস্থিত জনগণকে আশ্বস্ত করেন যে, শহরের যে কোন সমস্যায় নগরবাসীর পাশে থাকবেন এবং গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে লড়াই চালিয়ে যাবেন।
দক্ষিণ খুলশী চসিক জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. ইকবালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নেতা একরামুল করিম, এমএ আজিজ, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, গাজি সিরাজ উল্লাহ, মো. কামরুল ইসলাম, বেলায়ত হোসেন ঢালী, সরওয়ার আলম, মেয়রের রাজনৈতিক সচিব মারুফুল হক চৌধুরী, দক্ষিণ খুলশী সিটি কর্পোরেশন ভিআইপি হাউজিং সোসাইটির নেতা শাহেদ সরোয়ার, সৈয়দ মোরশেদ আলম, রেজাউল করিম আজাদ, আনোয়ারুল ইসলাম, ফয়েজুল ইসলাম, মো. জাহাঙ্গীর।