চট্টগ্রাম: সিটির ছয়টি ভূমি সার্কেলের অধীন রেয়াজউদ্দিন বাজার, বক্সিরহাট, পাহাড়তলী কাঁচা বাজার, পতেঙ্গা স্টীলমিল বাজার, বহদ্দারহাট কাঁচা বাজার ও দুই নম্বর গেইট কর্ণফুলী কাঁচা বাজারে সুলভদামে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যপ্রাপ্তি নিশ্চিতকরণে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সেলস সেন্টার খোলা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের এ ছয়টি পয়েন্ট ও ছাত্র সমন্বয়কদের পক্ষ থেকে নিত্য পণ্য নিয়ে সিটির তিনটি পয়েন্টে সেলস সেন্টার খোলা হয়েছে। পাশাপাশি, টিসিবি ২০টি পয়েন্টে সুলভমূল্যে পণ্য সামগ্রী দিচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সকালে সিটির স্টেশন রোডস্থ রেয়াজউদ্দিন বাজারের মুখে ভোক্তাদের হাতে সুলভমূল্যে পেঁয়াজ, সয়াবিন তেল, আলু, ডিম, পটল, লাউ, কাঁচা পেঁপে তুলে দিয়ে জেলা প্রশাসন সেলস সেন্টারের উদ্বোধন করেন জেলার প্রশাসক ফরিদা খানম। জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামরুজ্জামান, সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাজীব হোসেন, সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলাউদ্দিন,স্টাফ অফিসার টু ডিসি ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শাকিব শাহরিয়ার, রেয়াজউদ্দিন বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ, ছাত্র সমন্বয়কবৃন্দ, ক্যাবের নেতৃবৃন্দ ও সিভিল সোসাইটির নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল থেকে রাত আটটা পর্যন্ত সেলস সেন্টারগুলো খোলা থাকবে।
নিত্য পণ্যের সেলস সেন্টার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ফরিদা খানম বলেন, ‘চট্টগ্রাম শহরে ব্যবসায়-বাণিজ্যের প্রাণ কেন্দ্র রেয়াজউদ্দিন বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি পয়েন্টে সুলভমূল্যের বাজার তৈরি করেছি। বর্তমান সময়ে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি কমিয়ে আনতে জেলা প্রশাসন এ উদ্যোগ নিয়েছি। জেলার প্রত্যেক উপজেলায়ও সুলভমূল্যের বাজার খোলা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘দ্রব্যের মূল্য কমিয়ে আনার লক্ষ্যে গেল ১০ অক্টোবর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক দশ সদস্য বিশিষ্ট বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছিল। এর পর থেকে নিত্য পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার লক্ষ্যে আমরা পুরোদমে বাজার মনিটরিংয়ের কাজ শুরু করেছি। ১০ অক্টোবরের পর থেকে এ পর্যন্ত আমরা ৮৯টি অভিযান চ চালিয়েছি। অভিযানে ৩৫০ জনকে ২১ লাখ ৮৯ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেছি।
ফরিদা খানম আরো বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য সুবিধা বঞ্চিত ও খেটে খাওয়া মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য কমিয়ে আনা আমাদের মূল উদ্দেশ্য। এ জন্য সৎ ব্যবসায়ীরাসহ সবাই আমাদের পাশে আছে। আমাদের ধারাবাহিক বাজার মনিটরিং ও অভিযানের কারণে নিত্য পণ্যের মূল্য কিছুটা হলেও কমে এসেছে। সাম্প্রতিক সময়ে টানা বৃষ্টি ও বন্যার কারণে বিভিন্নস্থানে ফসলের ফলন কিছুটা কম ছিল। প্রতি বছর এ সময়ে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায়। অসাধু ব্যবসায়ীরাও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পণ্যের মূল্য বুদ্ধি করে রাখে। সংশ্লিষ্ট সবাই মিলে আমরা সমন্বিত উদ্যোগ নিতে পারলে অতিশীঘ্রই নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের ভিতর থাকবে। যত দিন পর্যন্ত নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়-ক্ষমতার মধ্যে না আসবে, তত দিন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট দপ্তর-সংস্থা ও ছাত্র সমন্বয়কদের নিয়ে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
ভোক্তাদের জন্য আরো বিভিন্ন ধরনের সবজি ও নিত্য পণ্য নিয়ে নিয়ে জেলা প্রশাসন সেলস সেন্টারের পরিধি বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি।