চট্টগ্রাম: ঐক্য ও সম্প্রীতির দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ উল্লেখ করে বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেছেন, ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ হচ্ছে বিএনপির মূলমন্ত্র। যারা জাতীয়তাবাদী শক্তিকে বিশ্বাস করেন এটার মূল উৎস হচ্ছে, যে যার যার ধর্ম ও সংস্কৃতি পালন করবে। এটা বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের একটি অংশ,। এর মধ্যে সব ধর্ম, ভাষা ও ইতিহাসের মানুষ আছে। সবাই মিলে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ। তবে, অনেকেই এটা হৃদয়ে ধারণ করে না। বিএনপিই এটাকে হৃদয়ে ধারণ করে। আর যারা বাঙালি জাতীয়তাবাদের কথা বলে তারাই বৌদ্ধদের মন্দির ভাংচুর করে। বাংলাদেশের প্রতিটি সংখ্যালঘু হামলার সাাথে আওয়ামী লীগ জড়িত। অপর দিকে, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে সব সম্প্রদায়ের লোকজন নিরাপদে ছিলেন।’
বুধবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন উপলক্ষে সিটির চান্দগাঁও বাহির সিগনাল বড়ুয়া পাড়ায় বৌদ্ধ বিহারে সম্প্রীতি সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমাবেশে মীর হেলাল আরো বলেন, ‘আত্মশুদ্ধি অর্জনের মধ্য দিয়ে অশুভকে বর্জন করে সত্য ও সুন্দরকে বরণের আয়োজন হল প্রবারণা।’
উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে উৎসব মূখর পরিবেশে প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপনের আহবান জানিয়ে তিনি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সবাইকে শুভেচ্ছা জানান।
সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ। বিশেষ অতিথি ছিল চট্টগ্রা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান ও বিএনপির সদস্য সাথী উদয় কুসুম বড়ুয়া।
এ দিকে, প্রবারণা পূণিমা উপলক্ষে বুধবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এরশাদ উল্লাহ ও নাজিমুর রহমানের নেতৃত্বে চট্টগ্রামের বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শন করা হয়। তারা চান্দগাঁও সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহার, কাতালগন্জ নবপন্ডিত বৌদ্ধ বিহার ও নন্দনকানন বৌদ্ধ বিহারে গিয়ে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে মৈত্রীময় শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং ফানুস ওড়ানোতে অংশ নেন। নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে প্রবারণা পূর্ণিমার শুভেচ্ছা জানান।
এ সময় এরশাদ উল্লাহ বলেন, ‘বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধ অহিংসা ও মানুষে মানুষে ভালবাসার বাণী প্রচার করে গেছেন। গৌতম বুদ্ধ বলেছেন, হিংসা দিয়ে হিংসাকে জয় করা যায় না, বরং শরণ নিতে হয় অহিংসার। আজকে পুরো বিশ্বে রক্তপাত, সংঘাত ও সংঘর্ষে মানবজাতি ক্ষতবিক্ষত। এ শ্বাসরুদ্ধকর মুহূর্তে গৌতম বুদ্ধের হিতোপদেশ মানুষকে অহিংসার পথে, ন্যায়ের পথে চালিত করবে। তাই, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদই সবাইকে একই বন্ধনে আবদ্ধ করে। শত বাঁধা বিপত্তির মধ্যেও আমাদের দীর্ঘ প্রত্যাশিত শান্তি ফিরে আসবে।’
নাজিমুর রহমান বলেন, ‘চট্টগ্রাম অঞ্চলে বৌদ্ধদের মূল বসবাসের জায়গা। আমরা চাই, সকলেই রাষ্ট্রের সমান অধিকার ভোগ করবে। আপনাদের মধ্যে থেকে রাজনীতিতে উঠে আসুন। বিএনপিতে আপনারা অংশ নেন। আপনারা নেতৃত্বে আসেন। বিএনপির ভিশন ২০৩০ এবং যে ৩১ দফা দিয়েছে, সেখানে সব সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি আছে। দেশের একমাত্র সুরক্ষা হচ্ছে গণতন্ত্র।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রা মহানগর বিএনপির প্রাক্তন সহ সভাপতি হারুন জামান, ইকবাল চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক কাজী বেলাল উদ্দিন, আরইউ চৌধুরী শাহীন, চান্দগাঁও থানা বিএনপির সভাপতি মো. আজম, আশীর্বাদক এস লোকজিত মহাস্থবির, চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ঐক্য ফ্রন্টের আহ্বায়ক রুবেল বড়ুয়া ও সদস্য সচিব কমল জ্যোতি বড়ুয়া, রঞ্জিত বড়ুয়া, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সদস্য সচিব বাপ্পি দে, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতা সজল বড়ুয়া, জুয়েল বড়ুয়া, দেবাশীষ বড়ুয়া নিরু, চয়ন বড়ুয়া, মোহন বড়ুয়া, নিশাত বড়ুয়া, জয় বড়ুয়া, উজ্জ্বল বড়ুয়া, আকাশ বড়ুয়া, মিক্সন বড়ুয়া, প্রদীপ বড়ুয়া, বিপ্লব বড়ুয়া, সাচিং মারমা, পলাশ মারমা, উপ্রাচিং মারমা।