চট্টগ্রাম: আওয়ামী লীগের আমলে গড়ে ওঠা লুটেরা ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ভেঙে দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণে এনে সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দেয়ার দাবি করেছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। পাশাপাশি, গণ অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া ফ্যাসিবাদের দোসর সাংবাদিক ও আন্দোলনে গুলি করে ছাত্র খুনের সাথে জড়িত পুলিশ সদস্যদের গ্রেফতারের দাবিও জানান তারা।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বিকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল থেকে তারা এসব দাবি জানান। আদায় না হলে জুলাই বিপ্লবের মত ফের আন্দোলনে নামার হুশিয়ারিও জানান তারা।
মানববন্ধনে ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা বলেন, ‘গেল ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদের দোষর লুটেরা ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট তৈরী হয়েছে। তারাই এখন অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপদে ফেলতে কোন কারণ ছাড়াই নিত্যপণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছে।’
দ্রুত সিন্ডিকেটের দৌরাত্ব বন্ধ করার দাবি জানান তারা।
সমন্বয়করা আরো বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলন নষ্ট করার অপচেষ্টা করেছিল চট্টগ্রামের কিছু সাংবাদিক। তারা বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রকাশের পাশাপাশি পুলিশের সোর্স হিসেবে সরাসরি কাজ করেছে। তাদের কারণেই অসংখ্য আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা হতাহত হয়েছে।’
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের কেউ কেউ প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ ডেকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পায়ের রগ কেটে দিয়েছে- এমন মিথ্যাচারও করেছে। এ ধরনের চিহ্নিত সাংবাদিক নামধারী দালালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানাচ্ছি।’
সমন্বয়ক রিদুয়ান সিদ্দিকী বলেন, ‘যে সব অতিউৎসাহী পুলিশ সদস্যরা বিনা উস্কানীতে ন্যায্য দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্র জনতার ওপর গুলি চালিয়ে হত্যার মত জঘন্য ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদেরকে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’
সমন্বয়ক রেজাউর রহমান বলেন, ‘সংবাদ মাধ্যমকে ব্যবহার করে এখনো প্রতি বিপ্লবের স্বপ্ন দেখছে পতিত স্বৈরাচারের দোসরা। দ্রুত সময়ের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারকে শিক্ষার্থীদের এ দাবি মেনে দোষীদের বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করার দাবি জানাচ্ছি।’
সমন্বয়ক নীলা আফরোজ বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা, ফ্যাসিবাদের দোসর সাংবাদিকদের বিচারের দাবি আদায় না হলে জুলাই বিপ্লবের মত ফের আন্দোলনে নামবে শিক্ষার্থীরা।’
রাসেল আহমেদের সভাপতিত্ব সমন্বয়ক ইয়াসির আরেফিন চৌধুরী, ওমর ফারুক সাগর, জুবায়ের আলম, সাফায়েত হোসেন, একেএম ইসতিয়াক সম্রাট।
সমাবেশে নেতারা আরো বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের দোসররা ঘাপটি মেরে থাকার কারণে চট্টগ্রামের আন্দোলনে হতাহতদের সঠিক তথ্য প্রচার হয়নি। চট্টগ্রামের আন্দোলন সংগ্রামের সঠিক তথ্য প্রচার না হওয়ার দায় ওই সব ফ্যাসিবাদের দোসর সাংবাদিকদের। সংবাদ মাধ্যম কর্তৃপক্ষ যদি ফ্যাসিবাদের দোষর সাংবাদিকদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা না নেয়, তাদের বিরুদ্ধে আমরা ফের মাঠে নামব।’