চট্টগ্রাম: বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেছেন, ‘হিন্দু সম্প্রদায়ের বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এ উৎসব উপলক্ষেও আওয়ামী অপশক্তি নতুনভাবে ষড়যন্ত্র শুরু করে দিয়েছে। বর্হিবিশ্বে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করছে। তাই, এবারো বিএনপিসহ ছাত্র জনতা তাদের সেই ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করবে। আপনারা নির্ভয়ে নিরাপদে উৎসব মূখর পরিবেশে দুর্গাপূজা উদযাপন করুন। বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক সব ক্ষেত্রে সমান অধিকার ভোগ করবে। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের একমাত্র পরিচয় আমরা বাংলাদেশি। এটাই বিএনপির রাজনীতি। তাই, এবারের পূজায় বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রতিটি মণ্ডপে ঐক্যবদ্ধভাবে টিম করে সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের পাশে থাকবে। পূজা উদযাপন কমিটির প্রতিনিধি সমন্বয়ে মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করা হবে। পূর্বের চেয়ে এবার আরো বেশি উৎসবমুখর পরিবেশে এ সর্বোচ্চ ধর্মীয় উৎসব পালিত হবে।’
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বিকালে সিটির কাজির দেউড়ির নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাথে মহানগর বিএনপির মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিন এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রামের সর্বস্তরের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রতি শারদীয় দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানান মাহবুবের রহমান।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব নাজিমুর রহমানের পরিচালনায় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। পূজার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মত বিনিময় করেন মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি আশিস ভট্টাচার্য ও সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল।
এ সময় পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ এ ধরনের মত বিনিময় সভা করে সহযোগিতা করায় বিএনপির নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান।
সভায় মীর হেলাল বলেন, ‘কোন অপশক্তি যাতে ষড়যন্ত্র করতে না পারে, সেজন্য আমাদের সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। পতিত সরকারের দোসররা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে। কিন্তু, এদেরকে কিছুতেই সফল হতে দেয়া হবে না। এ ধর্মীয় উৎসব শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পালন করতে সার্বিক সহযোগিতা করবে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি। চট্টগ্রামের প্রতিটি পূজামণ্ডপে বিএনপির সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে দিনরাত পাহারার ব্যবস্থা করা হবে।’
এরশাদ উল্লাহ বলেন, ‘ধর্মীয় পরিচয়ে বাংলাদেশে কেউ সংখ্যালঘু নয়, সবাই বাংলাদেশি। কিন্তু, আওয়ামী লীগের রাজনীতি হচ্ছে বিভাজনের রাজনীতি। তারা সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু বিভাজনের মাধ্যমে সব সময় দেশে অস্থিতিশীল করে রাখার চেষ্টা করেছে। হিন্দুদের সবচেয়ে ক্ষতি আওয়ামী লীগই করেছে। পতিত সরকারের দোসররা শান্তিপ্রিয় চট্টগ্রামে বার বার ধর্মীয় উস্কানি দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা করেছে। কিন্তু, চট্টগ্রামের সচেতন জনতা ষড়যন্ত্রকারীদের ফাঁদে পা দেয়নি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় বিএনপির নেতাকর্মীরা যে কোন ষড়যন্ত্র রুখে দিতে প্রস্তুত রয়েছে।’
নাজিমুর রহমান বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন, যেন প্রতিটি মণ্ডপে নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে টিম করে সনাতনীদের পাশে থাকে। তাই, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে ধর্মীয় উৎসব শান্তি ও স্বস্তি সহকারে উৎসব মুখর পরিবেশে পালন করতে সহযোগিতা করবে মহানগর বিএনপি। আমাদের থানা ও ওয়ার্ড বিএনপির নেতৃবৃন্দ স্থানীয়ভাবে পূজা উদযাপন কমিটির নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের পাশে থাকবে।’
সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির প্রাক্তন সহ সভাপতি হারুন জামান, যুগ্ম সম্পাদক কাজী বেলাল উদ্দিন, ইস্কান্দার মির্জা, আরইউ চৌধুরী শাহীন। বক্তব্য দেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজীব ধর তমাল, সদস্য বিপ্লব পার্থ, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি চন্দন তালুকদার, সাধন ধর, বিমল দে, প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক অর্পণ কান্তি ব্যানার্জি, রত্নাকর দাশ টুনু, সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ, অরুপ রতন চক্রবর্তী, সাংবাদিক প্রদীপ শীল, মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের আহ্বায়ক জন্টু কুমার বড়ুয়া, সদস্য সচিব বাপ্পি দে, দক্ষিণ জেলার সদস্য সচিব উজ্জ্বল বরণ বিশ্বাস, পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক নিখিল নাথ, সজল দত্ত, নটু চৌধুরী, বিপ্লব সেন।