চট্টগ্রাম: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ঢাকায় মৃত্যুবরণকারী বিএটিসির প্রকৌশল বিভাগের ছাত্র মো. ওমর বিন আবছারের বোয়ালখালীর আকুবদন্ডীস্থ গ্রামের বাড়ি, সিটির বহদ্দারহাটে নিহ ফার্নিচার মিস্ত্রী মো. ফারুক ও মুরাদপুরে মৃত্যুবরণকারী ওমর গণি এমইএস বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের বিবিএর ছাত্র ফয়সাল আহমদ শান্তের লালখানবাজারের বাসায় তাদের পিতা-মাতা ও স্বজনদেরকে সান্তনা ও সমবেদনা জানাতে সাক্ষাৎ করেছেন চট্টগ্রাম জেলার প্রশাসক (ডিসি) ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফরিদা খানম।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বোয়ালখালীর পোপাদিয়া ইউনিয়নের দুই নম্বর আকুবদন্ডী ওয়ার্ডের গ্রামে গিয়ে ঢাকায় গেল ৫ আগস্ট নিহত মো. ওমর বিন আবছারের কবর জিয়ারত করেন জেলার প্রশাসক। পরে ঘরে তার বাবা নুরুল আবছার ও মা রুবি আক্তারসহ স্বজনদের সান্তনা ও সমবেদনা জানান তিনি। এ সময় জেলা প্রশাসকের সামনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন ওমরের মা-বাবা ও ভাই-বোনেরা। ওমরের বাবা-মা তাদের সন্তানের কবরস্থানের রাস্তা সংস্কার ও তাদের বাড়ির পার্শ্ববর্তী একটি সড়কের নামকরণ ওমরের নামে করার ইচ্ছাপোষণ করলে জেলার প্রশাসক তাথক্ষণিক বিষয় দুইটির ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশনা দেন। ওমর পাঁচ ভাই ও এক বোনের মধ্যে তৃতীয়। বড় বোন এমবিবিএস ডাক্তার ও ছোট তিন ভাই কোরআনের হাফেজ।
এ দিকে, গেল ১৬ জুলাই সিটির বহদ্দারহাটে নিহত মো. ফারুকের স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে সাক্ষাতে শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর দুইটায় সিটির লালখান বাজারের টাংকির পাহাড় এলাকায় পরিবারের বাড়িতে যান ফরিদা খানম। এ সময় নিহত মো. ফারুকের স্ত্রী, শিশু পুত্র-কন্যা জেলার প্রশাসককে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। মো. ফারুকের স্ত্রী সীমা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে তার ছেলে-মেয়ের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাবে বললে তাৎক্ষণিক আর্থিক ও মানবিক সহায়তা হিসেবে সীমা আক্তারের হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে দেন এবং তার ছেলে-মেয়েকে সরকারী স্কুলে ভর্তিসহ বিনাবেতনে পড়ালেখার সুযোগ করে দেবেন বলে আশ্বস্ত করেন ডিসি।
একই সঙ্গে, শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটায় গেল ১৬ জুলাই সিটির মুরাদপুরে নিহত শিক্ষার্থী মো. ফয়সাল আহমদ শান্তর লালখান বাজারের বাঘঘোনা এলাকার বাসায় যান জেলার প্রশাসক। এ সময় শান্তর বাবা জাকির হোসেন ও মা কোহিনুর আক্তারসহ স্বজনদের সান্তনা ও সমবেদনা জানান তিনি। জেলা প্রশাসককে কাছে পেয়ে আন্দোলনে মো. ফয়সাল আহমদ শান্তর মা জেলার প্রশাসককে জড়িয়ে কান্নায় বার বার মুর্চা যান। একইসঙ্গে নিহতের বাবা ও ছোট বোন কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এ সময় আর্থিক ও মানবিক সহায়তা হিসেবে শান্তর মায়ের হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে দিয়ে শান্তর পিতার জন্য চাকুরীর ব্যবস্থা করার ঘোষনা দেন ফরিদা খানম। পরিবারে এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে শান্ত বড়। তার ছোট বোন সিএমপি স্কুল এন্ড কলেজে সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাদি-উর রহিম জাদিদ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট একেএম গোলাম মোর্শেদ খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. কামরুজ্জামান, বোয়ালখালীর ইউএনও হিমাদ্রী খীসা, স্টাফ অফিসার টু ডিসি মো. ফাহমুন নবী, বোয়ালখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. খায়রুল ইসলাম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রিজাউর রহমান ও সাদিক আরমান।