চট্টগ্রাম: আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেছেন, ‘আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও ২৫ জুলাইয়ের মধ্যেই ইউনিট আওয়ামী লীগের অসমাপ্ত সম্মেলন করতেই হবে। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রেও কার্যকর উদ্যোগ নিয়ে আগামী ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলনগুলো সম্পন্ন করতে হবে।’
তিনি বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকালে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সভায় এ ঘোষণা দেন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবু সাঈদ আল মাহমুদ আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী পুরো দেশে তৃণমূল স্তরে নেতৃত্ব ঢেলে সাজানোর জন্য যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, তাতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন নেতা যদি ব্যর্থ হন, তার যোগ্যতা ও দক্ষতা অবশ্যই প্রশ্নবিদ্ধ হবে ও তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সম্মেলন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি ও উদ্যোগ গ্রহণের জন্য থানাভিত্তিক দায়িত্বপ্রাপ্ত চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাদের নিয়ে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে, তারা যদি সম্মেলন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে অপারগ ও ব্যর্থ হন, তাহলে এ কমিটিগুলো বাতিল হিসেবে বিবেচিত হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘নেতৃত্ব যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যোগ্যতা, দক্ষতা, ত্যাগ-তিতিক্ষা ও দলীয় আদর্শের প্রতি আনুগত্যের বিষয়সহ সমাজে গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টিকেও অগ্রাধিকার দেয়া হবে। মনে রাখতে হবে, নেতৃত্ব ও পদ-পদবিতে কোন অবাঞ্চিত ও জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ কোন ব্যক্তি যাতে আসীন হতে না পারে সেদিকেও সজাগ দৃষ্টি দিতে হবে। এক্ষেত্রে, কোন ব্যত্যয় ঘটলে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের দায়ী হতে হবে।’
সভায় চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ আন্দোলন-সংগ্রামে এবং দল ও জাতির সংকট উত্তরণে সবচেয়ে বেশি ফলপ্রসূ ও কার্যকর অবদান রেখেছে। মহানগর আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটি কেন্দ্রের নিদের্শনা অনুযায়ী সাংগঠনিক কার্যক্রম ও বিষয়ভিত্তিক ইস্যুতে সব সময় রাজপথে ছিল এবং বর্তমান নেতৃত্ব অবশ্যই কর্মীবান্ধব হিসেবে সকলের আস্থা অর্জন করেছে। এ আস্থা ও বিশ্বাসকে অবশ্যই ধরে রাখতে হবে।’
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজম নাছির উদ্দীন কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন মহানগর আওয়ামী লীগ ও এর আওতাধীন থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিট আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে যে নির্ধারিত তারিখ ও সময়সূচি করে দিয়েছেন, তার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী মহানগর আওয়ামী লীগসহ থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিট স্তরে সম্মেলন অনুষ্ঠানের জন্য দলের সব স্তরের নেতা-কর্মীরা মুখিয়ে আছেন। এসব সম্মেলনের মাধ্যমেই দক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য সব স্তরের নেতাকর্মীকে আন্তরিকভাবে কাজ করে যেতে হবে। এ কার্যপরিধি পরিচালনার ক্ষেত্রে অবশ্যই শতভাগ সাংগঠনিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে ও কোন ধরনের দলীয় আদর্শ ও নীতি-নৈতিকতা বিরোধী আচরণকে কিছুতেই প্রশ্রয় দেয়া হবে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের মধ্যে অবশ্যই নেতৃত্ব ও পদ-পদবির জন্য প্রতিযোগিতা থাকতে পারে। আওয়ামী লীগের মত একটি বিশাল সংগঠনে এ প্রতিযোগিতা থাকাটাই স্বাভাবিক। তাই, বলে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার মত কোন ঘটনা বা আচরণ যাতে না হয়, সেদিকেও সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে ও সর্বোপরি কোনভাবেই যাতে বিভেদ, অনৈক্য, হানাহানি না ঘটে সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।’
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন যে, সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ও তথ্য-উপাত্ত ছাড়া কারো বিরুদ্ধে গড়পড়তা ও ঢালাও অভিযোগ কিছুতেই কাম্য হতে পারে না। এ ধরনের কল্পিত অভিযোগ দলের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক।
সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, আলতাব হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, উপদেষ্টা একেএম বেলায়েত হোসেন, সফর আলী, শেখ মাহমুদ ইসহাক, কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দ হাসান মাহমুদ সমশের, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, আহমেদুর রহমান সিদ্দিকী, মোহাম্মদ হোসেন, মানস রক্ষিত, জুবাইরা নার্গিস খান, দিদারুল আলম চৌধুরী, মাহাবুবুল হক মিয়া, আবু তাহের, নির্বাহী সদস্য আবুল মুনসুর, নুরুল আবছার মিয়া, সৈয়দ আমিনুল হক, পেয়ার মোহাম্মদ, দোস্ত মোহাম্মদ, গাজী শফিউল আজিম, কামরুল হাসান বুলু, বখতেয়ার উদ্দিন খান, গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী, সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার, নজরুল ইসলাম বাহাদুর, আহমদ ইলিয়াস, বিজয় কিষান চৌধুরী, জাফর আলম চৌধুরী, মোহাব্বত আলী খান, আবদুল লতিফ টিপু, নেছার উদ্দিন মঞ্জু, মোহাম্মদ জাবেদ, হাজী বেলাল আহমদ, মোরশেদ আকতার চৌধুরী।