কক্সবাজার: বাংলাদেশে প্রাতিষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থার সর্বনিম্ন স্তর গ্রাম আদালত। গ্রাম আদালত তথা স্থানীয়ভাবে বিচারব্যবস্থা এ দেশে বহু পূর্ব থেকে প্রচলিত থাকলেও, তা ছিল মূলত সামাজিক ব্যবস্থা, প্রাতিষ্ঠানিক নয়। তবে, এ ব্যবস্থার গুরুত্বেও ব্যাপারটি বিবেচনায় নিয়ে সরকার এটি প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করেছে, যেন স্থানীয়ভাবে সহজে, কম খরচে, দ্রুত এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় স্থানীয় বিরোধ নিষ্পত্তি করা যায় ও অন্যায়ের প্রতিকার লাভের জন্য তৃণমূলের দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, বিশেষত নারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এর প্রেক্ষিতেই স্থানীয় সরকার বিভাগের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ তৃতীয় পর্যায় প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।’
মঙ্গলবার (৪ জুন) সকালে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের শহীদ এটিএম জাফর আলম সিএসপি সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত জেলা পর্যায়ে গ্রাম আদালত কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং করণীয় শীর্ষক সমন্বয় সভায় এসব কথা বলেন কক্সবাজার জেলার প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সভায় তিনি আরো বলেন, ‘এ প্রকল্পের মধ্য দিয়ে কক্সবাজার জেলার ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে পরিচালিত গ্রাম আদালতকে আরো কার্যকর করা হবে। যাতে করে, স্থানীয় পর্যায়ে বিরোধগুলো স্থানীয়ভাবে সমাধান হতে পারে ও উচ্চ আদালত ও থানায় মামলার সংখ্যা কমে।’
সভায় সভাপতির বক্তৃতায় কক্সবাজার জেলার উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) এসএম ফেরদৌস ইসলাম বলেন, ‘আগে গ্রাম আদালতে এখতিয়ার ছিল ৭৫ হাজার টাকা; যা বর্তমানে সংশোধন হয়ে তিন লাখ টাকা করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে গ্রাম আদালত পরিচালনায় ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যানদের ক্ষমতা বেড়েছে। সরকার গ্রাম আদালতকে কার্যকর করতে বদ্ধপরিকর। কারণ, গ্রাম আদালত যথাযথভাবে কার্যকর হলে গ্রামীন জনগোষ্ঠীর বিচার প্রাপ্তি সহজ হবে।’
কক্সবাজার জেলার সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন পরিষদ সচিবদের উপস্থিতিতে সভায় গ্রাম আদালত সক্রিয়করণে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে গৃহিত পদক্ষেপগুলো, উপজেলাভিত্তিক গ্রাম আদালত কার্যক্রম পরিচালনায় অগ্রগতি, তুলতামূলক পিছিয়ে পড়া ইউনিয়নগুলোর বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলো ও করণীয় বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ তৃতীয় পর্যায় প্রকল্প, কক্সবাজার জেলা ব্যবস্থাপক সৈয়দ মোহন উদ্দিন। এছাড়া, শুরুতে পরিচয়পর্ব ও স্বাগত জানান স্থানীয় সরকার শাখার সহকারী কমিশনার মো রিফাত হোসেন।
প্রসঙ্গত, স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়িত বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ তৃতীয় পর্যায় প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকার, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) অর্থায়নে দেশের ৬১টি জেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। কক্সবাজার জেলায় এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন সহযোগী সংস্থা হিসেবে কাজ করছে ইপসা (ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল একশান)।