চট্টগ্রাম: লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান এবং সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমদ ভূঞা বলেছেন, ‘আইনের চোখে সকলে সমান, কিন্তু দারিদ্রতা, অজ্ঞতাসহ বিভিন্ন কারণে অনেকে আইনী সহায়তা নিতে চায় না। গরীব, নিঃস্ব, অসহায় ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী যারা আর্থিক কিংবা অন্যান্য আর্থ-সামাজিক কারণে আইনের আশ্রয় নিতে অক্ষম, তাদের জন্য আইনগত সহায়তার সৃষ্টি করা হয়েছে।’
রোববার (২৮ এপ্রিল) চট্টগ্রাম জেলা দায়রা জজ আদালতের সম্মেলন কক্ষে জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির আয়োজনে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস ২০২৪ উপলক্ষে দিবসের তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় সভাপতির বক্তৃতায় আজিজ আহমদ ভূঞা বলেন, ‘বিপুল জনগোষ্ঠীর এ দেশে প্রচুর মামলা রয়েছে। সবগুলো ট্রায়ালের মাধ্যমে শেষ করা যাবে না। আইনে আপোষগোয্য মামলার বিধান রয়েছে বলে সেটাকে গুরুত্ব দিয়ে ও মধ্যস্থতার মাধ্যমে মামলার জট থেকে সংশ্লিষ্টদের মুক্ত করার জন্য এ লিগ্যাল এইড তৈরি করা হয়েছে। চট্টগ্রামে জেলা পরিষদের উদ্যোগে স্মার্ট মেডিয়েশন রুম করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরির অংশ হিসেবে স্মার্ট মেডিয়েশন রুম নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে স্মার্ট পদ্ধতিতে মধ্যস্থতার মাধ্যমে আপোষে মামলা মীমাংসা করা হবে।’
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেন, ‘সকলের আইনগত সাহায্য পাওয়ার অধিকার থাকলেও সেটা সবাই নিতে চায় না। সামাজিক বা আর্থিক কারণে কিংবা সঠিক জায়গায় না পৌঁছানোর কারণে যথাযথ আইনানুগ সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়। এ অসুবিধা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য জাতীয় আইনগত সহায়তা কেন্দ্রের সাহায্য নিতে হবে।’
চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ বলেন, ‘লিগ্যাল এইড সৃষ্টির ফলে যারা পুরো জীবন শোষিত হয়েছে, তারা এখন ন্যায় বিচার পাচ্ছে। আর্থিক সহায়তা ও ন্যায় বিচারের নিশ্চয়তার ফলে মানুষ এখন লিগ্যাল এইডের উপর ভরসা রাখছে। লিগ্যাল এইডের বিষয়টি যদি বিদ্যালয়ের পাঠ্য-পুস্তকে পাঠ্য রাখা যায়, সেক্ষেত্রে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ আরো অধিকতর সচেতন হবে।’
সভায় নারী ও শিশু দমন ট্রাইবুন্যালের বিচারক মুরাদ মৌল্লা সোহেল, চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রবিউল আলম, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট একেএম গোলাম মোর্শেদ, চট্টগ্রওাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. নাজিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
সভায় লিগ্যাল এইডের সুবিধাভোগী আনোয়ারার বাসিন্দা কামাল উদ্দিন তার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন।
সকালে দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালির আয়োজন করা হয়। এছাড়া, এ উপলক্ষে সেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি এবং ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। অতিথিরা স্টল ও ক্যাম্প পরিদর্শন করেন।
সভাপতি ও অতিথিরা বেলুন উড়িয়ে কর্মসূচি সূচনা করেন।
















