চট্টগ্রাম: বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) চট্টগ্রাম জেলা শাখার উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহ দিবসে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও সমাবেশ হয়েছে।
সিটির জেএমসেন হল সংলগ্ন মাস্টারদা সূর্য সেনের আবক্ষ ভাস্কর্যে পুষ্পমাল্য অর্পণকালে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বাসদ চট্টগ্রাম জেলা শাখার ইনচার্জ আল কাদেরী জয়, জেলার সদস্য আহমদ জসীম, পুলক দাশ, মহিন উদ্দিন, প্রগতিশীল আইনজীবী ফ্রন্টের সদস্য মাহমুদুল হসসান, নাজমুল হাসান, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতা নাজিমউদ্দীন বাপ্পি, মোহাম্মদ খোরশেদ, নরুল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর শাখার সভাপতি মিরাজ উদ্দিন, স্কুল বিষয়ক সম্পাদক উম্মে হাবিবা শ্রাবণী, সদস্য অরুপ মহাজন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘আজ থেকে ৯৪ বছর পূর্বে মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বে সংঘটিত হয় চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহ। বৃটিশ শাসকদের অত্যাচার, শোষণ ও বঞ্চনার নির্মম কষাঘাত থেকে মুক্তির স্বপ্ন নিয়ে জীবনপণ বাজি রেখে সেই দিন এ দেশের তরুণ যুবকরা এ বিদ্রোহের সূচনা করে। স্বদেশপ্রেম আর জাতীয়তাবাদী আদর্শে উদ্বুদ্ধ এ বিদ্রোহের মাধ্যমে তারা ইংরেজ শাসনের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিল। একটি স্বাধীন, মানবিক মর্যাদার ও গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠা ছিল এ লড়াইয়ের মূলমন্ত্র। সেই স্বপ্ন বুকে ধারণ করে অগ্নিযুগের বিপ্লবীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমাদের দেশের মুক্তিযুদ্ধের ধারাবাহিকতায় দেশ স্বাধীন হয়েছিল। কিন্তু, স্বাধীনতার পর আজো সেই স্বপ্ন পূরণ হয় নি।’
বক্তারা আরো বলেন, ‘শাসকগোষ্ঠীর সীমাহীন দুর্নীতি, লুটপাট, গনবিরোধী কার্যকলাপের মাধ্যমে স্বাধীনতার আকাঙ্খা আজ ধূলিসাৎ। মানুষের মৌলিক মানবিক অধিকার খর্ব করে ধনী শ্রেণি তাদের সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে। দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে ধনী আরো ধনী, গরীব আরো গরীব হয়েছে। শ্রমিকদের ন্যয্য মজুরির দাবিতে আন্দোলন করতে গেলে পুলিশের গুলিতে লাশ হতে হয়। ফসলের মূল্য না পেয়ে কৃষক গলায় দড়ি বেঁধে আত্মহত্যা করে। নারীর সম্ভ্রম ও মর্যাদা প্রতিনিয়ত খর্ব হয়ে চলেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সার্টিফিকেট বিক্রির বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে। অশ্লীলতা, ভোগবাদি অপসংস্কৃতি, মাদকাসক্তি তরুণ যুবকদের লড়াইয়ের শক্তিকে ধ্বংস করছে। গণতন্ত্র, ভোটাধিকার আজ শাসক দলের জালিয়াতি ও প্রহসনে পরিণত হয়েছে । তাই, এ বৈষম্য, শোষণ সাম্প্রদায়িকতা ও স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগঠিত করতে যুব বিদ্রোহ আজো এক লড়াইয়ের চেতনা হিসেবে কাজ করছে।’
সমাবেশে বক্তারা পাঠ্যপুস্তকে বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরার আহবান জানান।