চট্টগ্রাম: রোববার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষ-১৪৩০ বঙ্গাব্দ। ভোরের রঙিন আলো রাঙিয়েছে বাঙালির নতুন স্বপ্ন ও সম্ভাবনা। প্রতি বারের মত এবারো চট্টগ্রামে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা শিল্পকলা একাডেমির প্রাঙ্গণে জাতি, ধর্ম, ও বর্ণ নির্বিশেষে সবার অংশগ্রহণে জাঁকজমকপূর্ণভাবে পলিত হয়েছে পহেলা বৈশাখ। প্রথমেই বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এতে শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বতস্ফূর্তভাবে অংশ নেন। বাদ্যের তালে তালে গ্রামবাংলার প্রাচীন ঐতিহ্যের লোকজ উপকরণ পালকি, পুতুল, রঙিন প্ল্যাকার্ড শোভাযাত্রায় যোগ করেছে অনন্য মাত্রা।
নববর্ষ উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় চট্টগ্রাম জেলার প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার প্রকাশ কান্তি চৌধুরী প্রধান অতিথি অতিথি ছিলেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ফয়সাল মাহমুদ, চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি প্রবীর কুমার রায়, চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম জেলা ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম সরোয়ার কামাল।
প্রকাশ কান্তি চৌধুরী বলেন, ‘১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে বের হয় প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রা। এ শোভাযাত্রা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর ইউনেস্কো থেকে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মর্যাদা পায়। কিন্তু, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি এখনো মঙ্গল শোভাযাত্রাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়। তারা বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্য ও অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতে চায়। বাংলাদেশের মানুষ ধর্ম, বর্ণ ও গোত্র ভেদে ভিন্ন হলেও সব বাঙালি বাংলা নববর্ষ অনুষ্ঠান এক ও অভিন্ন সত্বার আলোকে পালন করে। আমরা যদি দেশের স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিকে বিনাশ করতে না পারি, তাহলে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার পথ রূদ্ধ হয়ে যাবে। তাই, সকলের প্রচেষ্টায় অশুভশক্তিকে মোকাবেলা করে সামনের দিকে এগিয়ে যাব- এটা হোক আজকের এ দিনে আমাদের অঙ্গীকার।’
নববর্ষের আনন্দ আয়োজন উপলক্ষ্যে চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির প্রাঙ্গণে ছুটে এসেছে সর্বস্তরের জনসাধারণ। এ সময় চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির সংগীত দল, চট্টগ্রাম শিশু একাডেমি, ওড়িসী টেগোর এন্ড ডান্স মুভমেন্ট সেন্টার, ঘুংঘুর নৃত্যকলা কেন্দ্র, সংগীত ভবনসহ অসংখ্য সাংস্কৃতিক সংগঠন সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেয়। শিল্পীরা ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’ গানে গানে বরণ করে নেন বাংলা নববর্ষকে। নাচে-গানে জমজমাট ছিল পুরো শিল্পকলা একাডেমির প্রাঙ্গণ।