চট্টগ্রাম: যথাযথ মর্যাদা ও উৎসবমূখর পরিবেশে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস এবং ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন দুই দিনের বর্ণাঢ্য কর্মসূচির আয়োজন করেছে। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে সোমবার (২৫ মার্চ) সকাল দশটায় চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গীতিনাট্য এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় পাহাড়তলীর ফয়’স লেকস্থ বধ্যভূমিতে শহিদদের স্মরণে আলোক প্রজ্জ্বলন, রাত দশটা থেকে ১০টা এক মিনিট পর্যন্ত পুরো দেশে কেপিআই ও জরুরী স্থাপনা ব্যতীত এক মিনিটের জন্য প্রতীকি ব্ল্যাক আউট এবং সুবিধাজনক সময়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে ২৫ মার্চ গণহত্যা ও ঐতিহাসিক মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা, জনবহুল স্থানে গণহত্যার উপর দুর্লভ আলোকচিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ২৫ মার্চ রাতে নিহতদের স্মরণে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা।
এ দিকে, মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সূর্যোদয়ের সাথে সাথে প্রত্যুষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শেখ রাসেল চত্বরে ৩১ বার তোপধ্বনি ও কাট্টলীস্থ প্রস্তাবিত মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে (ডিসি পার্কের দক্ষিণ পার্শ্বে) পুস্পস্তবক অর্পনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের কর্মসূচী শুরু হবে। একই সময়ে সব সরকারী, আধা-সরকারী, স্বায়ত্বশাসিত এবং বেসরকারী ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল আটটায় চট্টগ্রাম এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন ও বেলুন-কপোত উড়িয়ে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের উদ্বোধন। একই সময়ে পুলিশ, কারারক্ষী, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, আনসার-ভিডিপি ও বিএনসিসি সমন্বয়ে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোয়ায়েল ইসলাম আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও কূচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করবেন।
দিবসটি উপলক্ষে একই দিন বিকাল চারটায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্ব ও দেশের উন্নয়ন’ বিষয়ক আলোচনা, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও ইফতার মাহফিল। চট্টগ্রাম জেলার প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম। বিশেষ অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরেআলম মিনা, চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ, চট্টগ্রাম মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার একেএম সরোয়ার কামাল দুলু।
দিবসটি উপলক্ষে সুবিধাজনক সময়ে সিনেমা হলসমূহে বিনা টিকিটে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী এবং জেলার সব উন্মুক্ত স্থানে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্য চলচ্চিত্র দেখানো হবে। সুবিধাজনক সময়ে জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি, দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের আত্মার শান্তি কামনায় মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোড়া ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা, জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ছাত্র-ছাত্রীদের সমাবেশ ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। চট্টগ্রামের সব হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, শিশু পরিবার, পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী কল্যাণ কেন্দ্র, শিশু দিবা-যত্ন কেন্দ্রসমূহ ও ভবঘুরে আশ্রয়কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার দেয়া হবে। এছাড়া, স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে ডিসি পার্ক, শিশু পার্ক, জাদুঘর ও চিড়িয়াখানা শিশুদের জন্য বিকাল চারটা পর্যন্ত উন্মুক্ত রাখা, বিনা টিকেটে প্রদর্শনীর ব্যবস্থাকরণ ও ডিস ক্যাবল অপারেটর/মালিক কর্তৃক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র দেখানো হবে।