গাজা উপত্যকা, ফিলিস্তিনি অঞ্চল: ইসরায়েল-হামাসের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বুধবার (২০ মার্চ) মধ্যপ্রাচ্যে সফরে আসার কথা রয়েছে। গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর গেল সপ্তাহে মুসলমানদের পবিত্র মাস রমজান শুরু হওয়ায় প্রধান মধ্যস্থতাকারী কাতারের উদ্যোগে নয়া করে আরেক দফা আলোচনা শুরু হয়েছে।
গাজাজুড়ে যুদ্ধ অবসানের কোন চিহ্ন ছিল না। ইসরায়েলের হামলায় গাজা উপত্যকার বেশিরভাগ অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। তারা লক্ষ লক্ষ ফিলিস্তিনিকে অবরুদ্ধ অঞ্চলের দক্ষিণে আশ্রয় নিতে বাধ্য করেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে বিরামহীন আক্রমণের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যাতে কমপক্ষে ৩১ হাজার ৮১৯ জন বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। এদের বেশিরভাগই মহিলা ও শিশু।
যুদ্ধের প্রায় ছয় মাস চলছে, ইসরায়েলের মূল সমর্থক যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রদের প্রতি গাজায় মানবিক সহায়তার প্রবাহ বাড়ানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছে।
এন্টনি ব্লিঙ্কেন বুধবার (২০ মার্চ) আঞ্চলিক পাওয়ার হাউস সৌদি আরব ও গাজার প্রতিবেশী মিশর সফরের কথা রয়েছে। মিশর পূর্ববর্তী মধ্যস্থতা প্রচেষ্টায় সম্পৃক্ত ছিল।
তিনি এ সপ্তাহের শুরুতে ফিলিপাইন সফরের সময় বলেছিলেন যে, ‘গাজার সবাই এখন ‘তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায়’ ভুগছে।’
এ দিকে, জাতিসংঘ-সমর্থিত একটি মূল্যায়ন বলেছে, ‘এ অঞ্চলের উত্তরে তিন লাখ মানুষের জন্য সাহায্যের পরিমাণ না বাড়ালে মে মাসের মধ্যে দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হবে।
জাতিসংঘের অধিকার বিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক বলেছেন, ‘ইসরায়েল সাহায্য সরবরাহে বাধা দিচ্ছে ও এমনভাবে সংঘাত পরিচালনা করছে যা ‘অনাহারকে যুদ্ধের পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।’
গাজার এএফপিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে গাজরের স্যুপের একটি অংশ পেতে মরিয়া জনতা জড়ো হয়েছে।
জাবালিয়ার বাসিন্দা মুসাব আল-মাসরি বলেন, ‘আমরা সারিবদ্ধ হয়ে এসেছিলাম। কিন্তু, সকলের জন্য পর্যাপ্ত খাবার ছিল না বলে দুঃখ প্রকাশ করে তারা আমাদের বের করে দিয়েছে।’
ইসরায়েলের গুপ্তচর প্রধান ডেভিড বার্নিয়া সোমবার মিশরীয় ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে ফের নয়া করে আলোচনা শুরু করেছেন।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি বলেছেন, ‘তিনি ‘সতর্কতার সাথে আশাবাদী’ তবে ‘কোন সাফল্য ঘোষণা করা খুব আগাম হয়ে যাবে।’
মাজেদ আল-আনসারি বলেছেন, ‘তারা উভয় পক্ষের পূর্ববর্তী প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পর হামাসের কাছে একটি পাল্টা প্রস্তাব পেশ করা হবে বলে আশা করছেন এবং এ নিয়ে কৌশলগত আলোচনা অব্যাহত থাকবে।
আলোচনা পুনরায় শুরু হলেও আসন্ন চুক্তির তেমন ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।’
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) ইসরায়েলের সেনারা গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে, হামাস হাসপাতালটি সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করে ইসরায়েলের সেনারা হামলা চালিয়েছে। হামলায় ৫০ জনের বেশী যোদ্ধা নিহত হয়েছে এবং প্রায় ৩০০ সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায়।
আল-শিফা কমপ্লেক্সে ইসরায়েলের অভিযানের সমালোচনা করে, হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়াহ ইসরায়েলকে ‘বিশৃঙ্খলা বপন ও সহিংসতাকে চিরস্থায়ী করতে’ এবং ‘দোহায় চলমান আলোচনাকে বানচাল’ করার প্রচেষ্টার জন্য অভিযুক্ত করেছেন।