চট্টগ্রাম: বিদ্যুৎসহ জ্বালানির অযৌক্তিক ও গনবিরোধী দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও সরকারের ভুল নীতি দুর্নীতির প্রতিবাদ জানিয়ে চট্টগ্রাম সিটিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। শনিবার (২ মার্চ) বিকালে সিটির সিনেমা প্যালেস চত্বরে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বাম গণতান্ত্রিক জোট চট্টগ্রাম জেলার সমন্বয়ক কমরেড অশোক সাহার সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন সিপিবি চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মুহম্মদ জাহাঙ্গীর, বাসদ চট্টগ্রাম জেলা শাখার ইনচার্জ আল কাদেরী জয়, বাসদের নেতা মুজিবুল হক। সমাবেশ পরিচালনা করেন বাসদ চট্টগ্রাম জেলা শাখার সদস্য আহমদ জসীম।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘সরকার বিদ্যুৎ খাতে ক্রমাগত লোকসানের অজুহাত তুলে ভতুর্কি কমানোর নামে মাসে মাসে মূল্য সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ মূল্য সমন্বয়ের মানে হল দাম বৃদ্ধি । মার্চ মাস থেকে বিদ্যুতের মূল্য মাসে মাসে বাড়বে। এ দফায় ইউনিট প্রতি দর ৩৪ থেকে ৭০ পয়সা বাড়তে পারে। ভোক্তা পর্যায়ে এখন বিদ্যুৎ বিক্রি হচ্ছে প্রতি ইউনিট আট টাকা ২৫ পয়সায় । আইএমএফের শতার্নুযায়ী সরকার বিদ্যুতে পাইকারি মূল্য ছয় টাকা ৭০ পয়সা থেকে ১২ টাকা ১১ পয়সায় উন্নীত করার পরিকল্পনা করছে। সেক্ষেত্রে, ভোক্তা পযার্য়ে প্রায় ১৫ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়বে। উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির অজুহাতে সরকার গেল ১৫ বছরে পাইকারি পর্যায়ে ১১ বার ও খুচরা পর্যায়ে ১৩ দফা দাম বাড়িয়েছে।’
বক্তারা আরো বলেন, ‘এমনিতেই নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অসহনীয় মূল্য বৃদ্ধিতে দেশের মানুষ বিপর্যস্ত। বিদ্যুৎ, গ্যাসের দাম বাড়লে জিনিসপত্রের দাম আরো বাড়বে। ফলে, নিম্নবিত্ত মধ্যবিত্ত জনসাধারণ অবর্ণনীয় ভোগান্তিতে পড়বে। সরকার মুখে দ্রব্যমূল্য কমানোর কথা বললেও বাস্তবে উল্টো পদক্ষেপ নিচ্ছে। মূল্য বৃদ্ধির ফলে জনসাধারণের ক্ষোভের মুখে সরকার মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের কথা বললেও বিদ্যুৎ গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে দেশের বৃহৎ ব্যবসায়ী শ্রেণীর স্বার্থ রক্ষার পথেই হাঁটছে।’
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘বিগত সময়ে আমরা বলেছি, বিদ্যুৎ গ্যাসসহ জ্বালানি খাতে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় লুটপাট চলছে। সরকারের ঘোষিত উৎপাদন ক্ষমতার প্রায় অর্ধেকটাই অলস পড়ে থাকছে। কিন্তু, কেন্দ্র ভাড়া বাবদ বিপুল পরিমাণ টাকা তাদের দিতে হচ্ছে। গেল ২০২২-২৩ অর্থ বছরেও ২৬ হাজার কোটি টাকার বেশি ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হয়েছে। কুইক রেন্টাল চুক্তি বাতিল, ভুল জ্বালানি নীতি প্রত্যাহার ও লুটপাট-দুনীর্তি বন্ধ করে দক্ষ ব্যবস্থানার মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনা সম্ভব ছিল। সরকার সে পথে না গিয়ে ব্যবসায়ী শ্রেণীর স্বার্থ রক্ষায় মূল্য বৃদ্ধির পথেই হাঁটছে। এর খেসারত দিতে হচ্ছে দেশের সাধারণ জনগণকে । এর দায় কোনমতেই জনগণ নেবে না।’
বক্তারা দ্রুত বিদ্যুৎ, গ্যাস, নিত্য পণ্যের মূল্য কমানোর দাবি জানিয়ে ও ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে বামপন্থীদের নেতৃত্বে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।