আট বছর আগে ২০১৩ সালে সন্দ্বীপ উপজেলার উমর শরীফ (৪৫) সাথে মৌলভী পাড়ার পেয়ারু বেগম (৩৫) বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এর মধ্যে তাদের দুটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়।বেকার স্বামীর সংসারের নানান বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় স্ত্রী পেয়ারা বেগম তালাকনামা পাঠায় স্বামীর কাছে, তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে শশুর বাড়িতে যায় উমর শরীফ।পরে তালাকের বিষয় নিয়ে স্ত্রীর সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত করে শরীফ। আহত স্ত্রীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) নিয়ে আসা হলে একদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মৃত্যু হয় পেয়ারা বেগমের।এদিকে রোববার স্ত্রীকে সকালে ছুরিকাঘাত করার পর রাতে বিষপান ও ছুরিকাঘাত করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে উমর শরীফ।পরে স্বজনরা চমেকে নিয়ে আসলে স্ত্রীর মৃত্যুর একদিন পর মঙ্গলবার স্বামীর ওমর শরীফেরও মৃত্যু হয়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গত ২৭ জুন (রোববার) সকাল ৮টার দিকে ওমর শরীফ সীতাকুণ্ড উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়নের উকিলপাড়ায় গিয়ে স্ত্রীকে সংসার করতে চাপাচাপি করেন। কিন্তু স্ত্রী পেয়ারা বেগম সম্পর্ক রাখবেন না জানালে ক্ষিপ্ত হয়ে ওমর শরীফ স্ত্রীর পেটে ছুরি দিয়ে আঘাত করেন। এরপর ওমর পালিয়ে যান। পরে প্রতিবেশীরা পেয়ারা বেগমকে উদ্ধার করে চমেক হাসপতালে ভর্তি করেন। রাতে তার অপারেশন হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত সোমবার সকাল ৭টায় তার মৃত্যু হয়।একই দিন রোববার স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত করার পর রাতে হালিশহর টোল রোড ফিলিং স্টেশনে বিষপান করে নিজের পেটে ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে উমর শরীফ। এ অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করে পুলিশ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসাধীন থাকার পর স্ত্রীর মৃত্যুর একদিন পর আজ মঙ্গলবার স্বামীর ওমর শরীফেরও মৃত্যু হয়। ওমর শরীফ ও পেয়ারা বেগমের সংসারে দুইটি মেয়ে আছেন। বড় মেয়ের বয়স ৮ ও ছোট মেয়ের বয়স ৫ বছর। গত ১৭ দিন আগে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।
এদিকে এ পেয়ার বেগমকে ছুরিকাঘাত করার ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী ওমর শরীফের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে মামলা করেছেন স্ত্রীর বড় ভাই মফিজুর রহমান। এ ঘটনায় করা মামলার ভবিষ্যত এবং ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক তদন্ত সুমন বণিক জানান, যেহুতু অভিযুক্ত মারা গেছেন সেক্ষেত্রে মামলার ভবিষ্যৎ নাই। তবে এ ঘটনার তদন্ত হবে এবং ঘটনায় অন্যকেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, স্বামী উমর শরীফ দীর্ঘদিন থেকে বেকার ছিলেন, স্ত্রী তার বাপের কাছ থেকে প্রাপ্ত সম্পত্তি বিক্রি করে স্বামীকে অনেক সার্পোট দিয়েছেন। সংসারের অভাব অনটন নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায় সময় মনোমালিন্য হতো।সেই বিরোধ থেকে মূলত স্ত্রী তালাক দিয়েছে বলে জানা গেছে। তাদের দুই সন্তান তাদের মামার কাছে রয়েছে বলেও জানান তিনি।